স্থাপত্য আর ইতিহাসের শহর

নীলে আকাশের নীচে নীল শহর যোধপুর। দুর্গ আর সৌধের শহরে ভ্রমণ অভিজ্ঞতা শোনালেন অমিতাভ ঘোষ।

- 

সময়টা ছিল মে মাস। এই সময় রাজস্থান যেতে হবে ভাবলেই কেমন লাগে! কিন্তু দরকারি কাজে ক'দিন থাকতেই হবে যোধপুরে। যতই কাজে যাই, জায়গাটা তো যোধপুর, তাই ভ্রমণের খিদেটাও চাগিয়ে উঠল। হঠাৎ কাজ পড়েছে বলে যাত্রা। হাওড়া যোধপুর এক্সপ্রেসে টিকিট পেলাম না। যাচ্ছি। হাওড়া বারমের সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসে।

শুধু একটাই অসুবিধা এই ট্রেনের যোধপুর পৌঁছনোর সময় রাত ২.৪০। যাইহোক, প্রায় দু'রাত ট্রেনে কাটানোর পর যোধপুর স্টেশনে যখন নামলাম ঘড়িতে তখন রাত ৩.১৫। পশ্চিম ভারতে মে মাসেও সকাল হয় অনেকটাই দেরিতে। ফলে আকাশ তখনও অন্ধকার। মনে একটা ভয় ছিল, অচেনা জায়গা, কোনও অসুবিধায় পড়ব না তো? কিন্তু না, যোধপুর বেশ সুন্দর স্টেশন। যাত্রীদের সুবিধার জন্য নানা ব্যবস্থা রয়েছে। এক প্ল্যাটফর্ম থেকে অন্যত্র মালপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য রয়েছে চওড়া লিফট। স্টেশনের বাইরে এলাম, ঘড়ির দিকে না তাকালে মাঝরাত না সন্ধেবেলা বোঝার উপায় নেই। অসংখ্য অটোরিকশ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বাইরে থেকে আলো ঝলমলে যোধপুর স্টেশন দেখে মন থেকে ভালো লেগে গেল। ভাবলাম আর একটু সকাল হোক তারপর অটো নেব। কিন্তু অটোচালকদের কাছে খোঁজখবর নিতে ওরাই আমাদের অভয় দিল।

শেষ পর্যন্ত একটা অটো নিয়ে সোজা রাজস্থান পর্যটনের হোটেল ঘুমর-এ চলে এলাম। আমাদের আগে থেকেই বুকিং করা ছিল। বেশ সুন্দর হোটেল। এখন অফ সিজন হওয়াতে একদমই ফাঁকা। বেশ গোছানো আমাদের ঘরটি। সাদা ধবধবে বিছানা, ড্রেসিং টেবিলে ইলেকট্রিক কেটলি, চা, কফি, দুধ, চিনির সরঞ্জাম সাজানো সেখানে। সুন্দর পরিষ্কার পরিছন্ন বাথরুম। আমরা হাত মুখ ধুয়ে, স্নান সেরে কয়েক ঘণ্টা বিশ্রাম নিলাম। দেখতে দেখতে সকাল হয়ে চারদিক আলোয় ভরে উঠল। আমাদের সামনের ছোট্ট বারান্দায় গিয়ে দেখি হোটেলের সামনেই মেন রোড। তার কিছুটা দূরে রেললাইন। যোধপুর শহরের মাঝখান দিয়ে চলে যাচ্ছে একের পর এক রেলগাড়ি। বেশ ভালো লাগছিল, শিশুর মতো কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে তার মজা উপভোগ করলাম। তারপরেই নেমে পড়লাম কাজে। যে জন্য এত দূর আসা।