বম্বে যা বলবে আমি মোটেই তা করব না, হৃদয় যা বলবে তা-ই করব

কলকাতায় পরিচালক ও চিত্রশিল্পী মুজফফর আলি এবং স্থপতিডিজাইনার মীরা আলি। জুটির মুখোমুখি সংবেত্তা চক্রবর্তী।

- 

বয়স ছায়া ফেলতে পারেনি পরিচালক মুজফফর আলির এনার্জিতে। ‘গমন’ এবং ‘উমরাও জান' এর মতো কাল্ট ছবির পরিচালক আজও সমান আগ্রহী সিনেমা বানানোয়। স্ত্রী, স্থপতি ও ডিজ়াইনার মীরা আলির সঙ্গে এসেছিলেন কলকাতায়, প্রদর্শনী ‘হরফ' এর উদ্বোধন করতে। ফোটোসেশনের ফাঁকে দু'জনেই বলছিলেন, এই প্রদর্শনীর বিষয়ভাবনা অভিনব লেগেছে তাঁদের, কারণ এক-একটা অক্ষর বা হরফ আদতে দুনিয়া বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। তাঁদের পেশা-জীবন, সমাজ ও পৃথিবী সম্পর্কে নানা ভাবনা উঠে এল কথোপকথনে।

কেমন লাগছে কলকাতায় ফিরে? আপনার তো কাজের শুরুই এখানে? মুজফফর: হ্যাঁ, ১৯৬৭ সালে। যে অ্যাডভার্টাইজিং এজেন্সিতে আমি কাজ করতাম, তার চেয়ারম্যান ছিলেন সত্যজিৎ রায়। আর্ট ডিরেকটরও ছিলেন। খুব কাছ থেকে ওঁকে কাজ করতে দেখেছি আমি।

আপনি এর আগে বলেছেন, ছবির প্রতি আপনার যে আগ্রহ, তাতেও এ শহরের অনেকখানি অবদান....

মুজফ্ফর: দেখুন, ভারতে কারও জন্ম হয়েছে মানে সিনেমা সে দেখবেই। প্রশ্ন হল, সে সব ছবির কতটা গভীরে আপনি ঢুকতে পারছেন। আপনার শিল্পীমনকে ছবিগুলো কতটা ছুঁতে পারছে। বাজারে যে সব ছবি চলে, সেগুলো দেখা মানে ধরুন রেস্তরাঁয় গিয়ে খাওয়ার মতো। প্রায় সর্বত্রই এক স্বাদ! লেকিন জো ফিল্মে আর্ট বন যাতি হ্যায়, উনকা এক অলগ শক্‌ল, অলগ রাস্তা হোতা হ্যায়। সে সব ছবি তখনই জন্ম নেবে, যখন ফিল্ম সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চর্চার আগ্রহ থাকবে আপনার। এবং ছবির সঙ্গে যুক্ত এমন কিছু মানুষের সঙ্গে আপনার যোগাযোগ হবে, যাঁদের কাজ দেখে আপনি ভাববেন, ‘কাজ করতে হলে এ রকমই করা উচিত!' কলকাতায় এসে আমার তেমন কিছু মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল। যেমন সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন। তখন অবশ্য নিজেও অতটা ভাবিনি যে, ফিল্মই বানাব একদিন। তবে চিত্রকলার প্রতি আমার যে আগ্রহ ছিল, তা দিশা পেল এখান থেকেই। আমার ওয়ান-ম্যান এগজ়িবিশন হয়েছিল অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসে, ১৯৬৮ সালে। লেডি রাণু মুখোপাধ্যায় উদ্বোধন করেছিলেন। দর্শক আমার কাজ ভালবাসলেন। একটা কসমোপলিটান পরিবেশ পেয়েছিলাম কলকাতায়। অনেক চিত্রশিল্পীর সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল।