রূপচর্চার ভোলবদল!

ভারতে রূপচর্চার জগতে গত কয়েক বছরে ঘটেছে বড় পরিবর্তন। আগে যেখানে ভেষজ উপাদানেই ভরসা রাখতেন ভারতীয়রা, সেখানে এখন তাঁরা বেছে নিচ্ছেন অ্যাসিড সমৃদ্ধ উপাদান। এই দিশা পরিবর্তনের কারণ কী? বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করলেন সংবেত্তা চক্রবর্তী।

- 

আমরা, অর্থাৎ ভারতীয়রা, মোটামুটি ছোট থেকেই জেনে যাই যে, কাঁচা হলুদ বাটা, দুধের সর, টোম্যাটো— এ সব শুধু শরীরকে পুষ্টি দেয় তা-ই নয়, ত্বকও সুন্দর রাখতে কাজে লাগে। আর একটু বড় হওয়ার পর মুলতানি মাটি, গোলাপ জল, অ্যালো ভেরা জেল, ইত্যাদির সঙ্গেও পরিচয় হয়ে যায়। প্রকৃতি যে অফুরন্ত উপাদান সাজিয়ে রেখেছে আমাদের সুন্দর করার জন্য, এই বোধ ভারতবাসীর রক্তে মিশে রয়েছে সুদূর অতীত থেকে। তাই হয়তো কয়েক বছর আগে অবধিও রূপচর্চার কোনও উপাদান কিনতে হলে আমরা ‘হার্বাল প্রডাক্ট’গুলোকেই বেছে নিতাম। কিন্তু হালে এই ট্রেন্ডের অনেকটা বদল হয়েছে। এখন ত্বক চর্চার কোনও উপাদান কিনতে গেলে আমরাই দেখে নিই, ত্বকের প্রয়োজন অনুযায়ী হায়ালুরনিক, স্যালিসাইসিক বা গ্লাইকোলিকের মতো অ্যাসিড তাতে রয়েছে কি না! অ্যাসিড দিয়ে যে ত্বকের উপকার হতে পারে, সে কথা শুনলে আগে লোকে বিশ্বাসই করতে চাইত না— এবং সেটা খুব প্রাচীনকালেও নয়, এই কয়েক দশক আগে পর্যন্তই! সুতরাং ভারতীয় রূপচর্চার কাঠামোয় একটা বড় রকমের বদল ঘটে গিয়েছে নিঃসন্দেহে। প্রশ্ন হল, এই বদল কী ভাবে হল, কেন হল? এবং এই বদলে আমাদের ত্বকের কতটা মঙ্গল হচ্ছে?

অ্যাসিড কেন? রূপবিশেষজ্ঞ প্রিসিলা কর্নারের মতে, আগে ত্বকের যে কোনও সমস্যায় সকলে ফেশিয়াল থেরাপিস্টের কাছে যেতেন। এখনও যান, কিন্তু পাশাপাশি যান ডার্মাটোলজিস্টের কাছেও। কারণ, সব কিছুকেই বিজ্ঞানসম্মত ভাবে ভেবে দেখতে শিখেছি আমরা। আন্তর্জালের সৌজন্যে মানুষের এক্সপোজারও বেড়েছে। বিভিন্ন রিল-এ বিউটি প্রডাক্ট সম্পর্কে দেখাই শুধু নয়, চাইলে ডার্মাটোলজিস্টদের ব্লগ পড়তে পারেন তাঁরা। অ্যাসিডের গুণাগুণ সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক লেখাপত্র পড়তে পারেন। ফলে মানুষ অনেক কিছু জানতে পারছেন এবং রূপবিশেষজ্ঞদেরও এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছেন। তবে ভেষজ উপাদানের কদর এখনও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।