ক্লিওপেট্রা

এপ্রিল ২০৪৭-এর এক উজ্জ্বল সকালে তমোনাশ রওনা দিল তার চালকবিহীন গাড়ি র‍্যাম্বো নিয়ে অফিসের পথে। ভবিষ্যতের এই শহরে জীবন ভার্চুয়াল হলেও মানুষে-মানুষে দূরত্ব এখনও রয়ে গেছে।

- দে বা শিস দে ব

এপ্রিল ২০৪৭ সকাল ৯টা। তমোনাশ সতেরো তলায় ওর ফ্ল্যাটের বারান্দায় এসে দাঁড়াল। এই সকালেই ঝাঁঝাঁ রোদ। চারপাশ ঝলমল করছে। নীচের খোলা পার্কিং-এ ওর গাড়িটি পার্ক করা। কিন্তু রোদে নিশ্চয়ই তেতে আছে। ঘরে এসি চলছে, চব্বিশ ডিগ্রিতে সেট করা। বাইরে অবশ্যই চল্লিশ-বিয়াল্লিশ হবে। তমোনাশ কব্জির ঘড়ির দিকে তাকাল। স্নান এবং ব্রেকফাস্ট হয়ে গেছে। শুধু জামাকাপড় পরা বাকি। দশ মিনিটের মধ্যেই ও নেমে যাবে। রিমোট হাতে নিয়ে গাড়ি স্টার্ট করে এসি চব্বিশ ডিগ্রিতে সেট করে দিল। দশ মিনিটে ঠান্ডা হয়ে যাবে। ওয়ার্ডোব থেকে হালকা নীল রঙের শার্ট আর খাকি ট্রাউজ়ার বের করে পরে নিল। পার্স, কলম ও ফোন পকেটে ঢুকিয়ে নিল। যদিও পার্স ও কলমের ব্যবহার প্রায় উঠেই গেছে, তবুও। আজকাল টাকা-পয়সা লেনদেন ভার্চুয়াল কারেন্সিতেই হয়। গত দশক অবধি ‘ইউপিআই’ বলে একটি বস্তু ছিল, এখনও কিছু বয়স্ক লোকজন সেটা ব্যবহার করেন। তবে তমোনাশ করে না। ও ভার্চুয়াল কারেন্সিতেই বেশি অভ্যস্ত। জুতো পায়ে গলিয়ে লিফটে করে নামার সময় আলিয়ার মুখোমুখি হয়ে গেল। আলিয়া এই বাড়িটির তেত্রিশ তলায় থাকে। বয়সে হয়তো ওর কাছাকাছিই হবে, কিন্তু নিজেকে এখনও টিন-এজার বলেই মনে করে। এই মুহূর্তে ওর পরনে মভ রঙের হাতকাটা টি-শার্ট আর কলাপাতা-সবুজ খাদির হাফ প্যান্ট। কোলে ওর ছাই রঙের পার্সিয়ান বেড়াল। পাতলা সুতির টি-শার্টের নীচে ওর সুডৌল স্তনযুগলের আভাস প্রকট। তমোনাশকে দেখে আলিয়া ঠোঁট টিপে একটু সামাজিক হাসি হাসল।

“অফিস যাচ্ছ?” “হ্যাঁ।” “তোমাদের এখনও অফিস যেতে হয়? আমাদের তো অফিসই উঠে গেছে।” “আমাদের ওঠেনি, তাই যেতে হয়”, তমোনাশ মুখে বলল। কিন্তু মনে মনে বলল, “তোমাদের যেতে হয় না তো আমি কী করব? কী কাজই-বা করো!” “আসলে আমেরিকান কোম্পানি তো, এরা আবার সব কিছু ভার্চুয়ালি করতেই পছন্দ করে”, আলিয়া বলল।