আত্মবিশ্বাসের অভিযাত্রা

দু'টি সাম্প্রতিক হিন্দি ছবির আলোচনা।

- 

চল চ্চিত্ৰ ময়দান ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ হল সাতচল্লিশে। সদ্য স্বাধীনতার স্বপ্ন ও আস্বাদ তথাকথিত ‘হিন্দুস্থান’এর সর্বাঙ্গে মাখামাখি। তারই একটু-আধটু ছিটকে আসা আশাবীজ ভারতের জাতীয় ফুটবল দলকেও তাড়িত করেছিল নিশ্চিত। হিন্দুস্থানকেই নিজের দেশ বলে মনে করা অসংখ্য মুসলিম মানুষদের মধ্যে হায়দরাবাদের সৈয়দ আবদুল রহিমও ছিলেন। তবে তাঁর ছিল আর-একটি বাড়তি দায়িত্ব— জাতীয় ফুটবল দলের কোচ ছিলেন তিনি। দেশের প্রতিটি কোণে সমৃদ্ধির লক্ষ্যে কর্মময় হোমাগ্নির আলো জ্বলছে যখন, রহিম সাহেব তখন একটি চর্মগোলকে খুঁজছিলেন সেই আলোর বিচ্ছুরণ। সেই ধীমান ফুটবল প্রশিক্ষকের বায়োপিক, পরিচালক অমিত রবীন্দ্রনাথ শর্মার সাম্প্রতিক ছবি ময়দান। ফুটবল নিয়ে আমাদের উন্মাদনার বয়স শতবর্ষ পেরিয়ে গেছে। তবে সেটা দর্শক হিসেবে। ওই ম্যাজিক-মাখা চর্মগোলকটি পায়ে নিয়ে আমাদের সাফল্যের সংখ্যা হাতেগোনা। তার মধ্যে উজ্জ্বলতম অধ্যায়টি রচনা করেছিলেন এস এ রহিম। তাঁকে বলিউডের এমন একটি বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের মাধ্যমে এই ভাবে প্রতিষ্ঠা করার কাজটি জরুরি ছিল। এই দেশ যে শুধুমাত্র কাশ্মীরের ফাইল বা কেরলের কাহিনি বহন করেনি, জাতি-ধর্ম এমনকি প্রদেশ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিক তেরঙা পতাকাটিকে অন্তর থেকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে, তার একটি আখ্যান রচিত হল ছবিটিতে। ক্রীড়াপ্রেমী ভারতীয় নাগরিকের উচিত ইতিহাস-আশ্রিত এই ছবির কথা দেশের সর্বত্র পৌঁছে দেওয়া। ময়দান শব্দটি ফারসি ভাষা থেকে এসেছে। মাঠ অথবা প্রান্তরের সমার্থক শব্দ হলেও খেলার সঙ্গে ময়দানের অন্তরের যোগ বেশি। শিরোনাম দেখে বোঝার উপায় নেই, এই ছবি কোনও বিশেষ ব্যক্তিত্বের বায়োপিক; মনে হতে পারে খেলার জগতে যা কিছু ঘটে চলে, তারই কোনও কাহিনি বুনেছেন পরিচালক। কাহিনির আদ্যন্তে বোঝা যায় কিংবদন্তি ফুটবল প্রশিক্ষকের প্রতি পরিচালক এবং প্রযোজকের যৌথ ট্রিবিউট এটি। তার সঙ্গে অন্তর্লীন দায় বহন – ভারতীয় ফুটবলের স্বর্ণযুগকে ফ্রেমবন্দি করে রাখা। সেই স্বর্ণমণ্ডলের কেন্দ্রে আছেন রহিম সাহেব, আর তাঁকে ঘিরে গড়ে ওঠা তারকা-বলয়ের অন্যতম পিকে, চুনী, বলরাম, জার্নেল, থঙ্গরাজ, অরুণ ঘোষরাও আছেন স্বমহিমায়। রহিম সাহেব এগারো বছর ভারতের ফুটবল দলের প্রশিক্ষক ছিলেন। তাঁর যত্নে কী ভাবে সদ্য স্বাধীন দেশ ফুটবলকে কেন্দ্র করে আত্মপরিচয় গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর ছিল, সেই আখ্যান এই সিনেমার স্টোরিলাইন। রহিম সাহেবের চেহারার সঙ্গে অজয