দুঃখবিলাসী ক্যামেরাওয়ালা জিনিয়াস

তাঁকে ‘জিনিয়াস' বলে সিনেমা জগৎ স্বীকৃতি দিয়েছে তাঁর মৃত্যুর পর। মাত্র ১৩ বছরের কেরিয়ারে গুরু দত্ত তৈরি করেছিলেন এমন একটি দুনিয়া, যা তাঁর অপছন্দের বাস্তব থেকে দূরে। জন্মশতবর্ষে সেই জিনিয়াসের ক্ষুদ্র এবং মহৎ জীবনের বিষাদগাথা লিখছেন অংশুমিত্রা দত্ত

- অংশুমিত্রা দত্ত

দুঃখের সঙ্গে ‘বিলাস' শব্দটি দুঃ যেন আনন্দের উৎস। মানে দুঃখের মধ্যে থেকে সুখ খুঁজে নেওয়াটাই যেন জীবনের উদ্দেশ্য। কিন্তু যদি উল্টোটা হয়? তার ফলাফল জীবনবিমুখতা, অর্থাৎ মৃত্যু। গুরু দত্ত যেখানে যেতেন, গলায় ঝুলত একটি ক্যামেরা। এটাই যেন একজন ভিওয়াল আর্টিস্টের পরিচয়। হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে একটি কথা প্রচলিত, গুরু দত্ত স্টাইলে শুট করুন।' প্রায়ই সিনেমাটোগ্রাফারকে পরিচালকরা এমন আবদার জানিয়ে থাকেন। কাব্যিক গল্পকথন, সামাজিক

ধারাবিবরণী তো তাঁর সিনেমার বৈশিষ্ট্য বটেই। তবে ‘এস্ট্যাবলিশিং শট' দিয়ে সিন শুরু করা ‘গুরু দত্ত স্টাইল'। একটি ওয়াইড শট দিয়ে দৃশ্যের শুরু, স্থান-কাল এবং প্রসঙ্গ বুঝিয়ে দিতেন। তারপর আসত ক্লোজআপ শট। প্রথম লং ফোকাল লেংথ লেন্স, ৭৫ মিমি এবং ১০০ মিমি তিনিই ব্যবহার করেন। ৫০ মিমি লেন্সের মতো করে দেখে চোখ, কিন্তু ৭৫ মিমিতে গোলাকৃতি ক্লোজআপ ধরাও ‘গুরু দত্ত স্টাইল'।

তদবীর সে বিগড়ি হুই তকদীর বনা লে আসলে সাধারণভাবে গল্প বলার জন্য গুরুর জন্মই হয়নি। ঠিক যেমনটা গুরুর কাছ থেকে প্রত্যাশিত, অন্তিম সময়ে গিয়ে তিনি তাঁর চেয়ে একদম আলাদা কিছু করে বসবেন। ‘বাড়ি’, ‘আর পার’, ‘সিআইডি' বানিয়ে দিব্যি সফলভাবে চলছিল গুরুর প্রযোজনা সংস্থা। কিন্তু তিনি বানিয়ে ফেললেন নিজের স্বপ্নের ছবি ‘পিয়াসা’, যেটা দর্শক এবং সমালোচকদের বুঝতেই অনেকটা সময় লেগে গেল। পরিচালক-প্রযোজক, পরিচালক সঙ্গীতকার, পরিচালক-চিত্রনাট্যকার আকছার দেখা যায়। কিন্তু পরিচালক-কোরিয়োগ্রাফার? বিশেষত সময়টা যখন পাঁচের দশক। গুরু দত্তর ব্যক্তিত্ব দেখে বোঝা দুষ্কর যে, তিনি নিজে গানের কোরিয়োগ্রাফি করতেন। কারণ তিনি উদয়শঙ্করের কাছে নাচ শিখেছিলেন। ভাবতে পারেন, চারের দশকে ১৭৫০ টাকা মাইনে পেতেন উদয় শঙ্করের নাচের স্কুলে, পেশাদার নৃত্যশিল্পী হিসেবে! আবার এই সিনেমাপ্রেমী জিনিয়াস একসময় জীবনের ভালবাসা, প্রিয়তমা স্ত্রীর কথা শুনে ছেড়ে দিয়েছিলেন পরিচালনা। বাসন্তী এবং শিবশঙ্কর পাড়ুকোনের বড় ছেলে বসন্তকুমারের জন্ম ১৯২৫-এর ৯ জুলাই, কর্ণাটকের পাড়ুকোন গ্রামে। পাড়ুকোনরা একটি সারস্বত ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়। এবং দীপিকা পাড়ুকোনও লতায়-পাতায় গুরু