পোশাকে ফুলের রং

গাঁদা, পলাশ, গোলাপ বা ডাবের খোল, পেঁয়াজের খোসা... পোশাকে “প্লান্ট ডায়িং’ ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। লিখছেন মধুরিমা সিংহ রায়।

- মধুরিমা সিংহ রায়।

এবারের দীপাবলীতে আলিয়া ভট্ট, রণবীর কপূর ও ছোট্ট রাহার হলুদ রঙের পোশাক বেশ ভাইরাল হয় নেটমাধ্যমে। জানা যায়, পোশাকের রঙের উৎস মন্দিরের গাঁদা ফুলের নির্যাস! তারকা দম্পতি উৎসব উদযাপনের জন্য এমনই পরিবেশ-বান্ধব পোশাক বেছে নিয়েছিলেন। শুধু তাঁরাই নন, ‘প্লান্ট ডায়েড' পোশাক বেছে নিচ্ছেন অনেকেই। অর্থাৎ, ফুল, পাতা, সব্জির অংশ, গাছের ছাল বা অন্য অংশের নির্যাস থেকে নিঃসৃত রঙে রঙিন হবে আপনার পোশাক। পরিবেশ বান্ধব তো বটেই, ত্বকের জন্যও ভাল...

কী ভাবে হয় প্লান্ট ডায়িং? আলিয়া-রণবীরের পোশাকটি যে ব্র্যান্ডের, সেই 'রি সেরেমনিয়াল' দীর্ঘ দিন ধরেই 'কনশাস ক্লোদিং'য়ে বিশ্বাসী। ব্র্যান্ডের কর্ণধার অতীভ আনন্দ বললেন, “প্লান্ট ডায়িং-এর পুরো প্রক্রিয়াটিই ন্যাচরাল। পোশাকের রঙে কখনও প্লান্ট সোর্স সরাসরি ব্যবহার করা হয়, আবার কখনও প্লান্ট সোর্সকে রিসাইক্লিং করেও ব্যবহার করা হয়। যেমন ধরুন, মন্দিরে যে বিপুল পরিমাণ ফুল ব্যবহারের পর নষ্ট হয়, তা পোশাকের রঙে ব্যবহার করি আমরা। গোলাপ, গাঁদা, জবা বা ডাবের সবুজ অংশ বিপুল পরিমাণে মন্দির থেকে সংগ্রহ করি। আমাদের প্রকৃতি রঙে পরিপূর্ণ। এ বার সেই রং কী ভাবে আপনি পোশাককে রাঙিয়ে তুলতে ব্যবহার করবেন, তা আপনার দায়িত্ব।” ওয়েস্ট মেটিরিয়ালকে এ ভাবেই পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী করেন তাঁরা। যেহেতু তাঁদের ব্র্যান্ড মুম্বইস্থিত, স্থানীয় মেটিরিয়ালই ব্যবহৃত হয়। অতীভ জানালেন, মন্দির থেকে প্রতি সপ্তাহে ফুল সংগ্রহ করা হয়। তার পর তা শুকোতে (এয়ার ড্রায়িং) দেওয়া হয়। কোন ঋতুতে ফুল সংগ্রহ করা হচ্ছে, তার উপর নির্ভর করে কত দ্রুত তা শুকোবে। রং ফুল বা পাতার উপর বসে গেলে ফুটন্ত জলে ফুল-পাতাগুলি ফেলে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে পোশাকের ফ্যাব্রিককেও বিশেষ পদ্ধতিতে প্রস্তুত করা হয় যাতে তা প্রাকৃতিক রং শুষে নিতে পারে। ডাই করার আগে ফ্যাব্রিককে প্রি ট্রিটমেন্ট' করতে হয়। ‘মরড্যান্ট' বা ডাই ফিক্সেটিভের সাহায্যে রং পোশাকের ফাইবারে বসে যেতে পারে। ফলে, সহজেই পোশাক থেকে রং উঠে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না। মূলত, এটিই কালারিং প্রসেস।