বড়মাসি নির্জন এককের সাধিকা ছিলেন

কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোট বোন বীথিকা মুখোপাধ্যায়ের ছেলে প্রিয়ম মুখোপাধ্যায়। পেশায় সঙ্গীতশিল্পী ও গবেষক। তিনি ভাগ করে নিলেন বড়মাসিকে নিয়ে নানা স্মৃতি।

- 

নিজের মায়ের মতো করেই আমার বড় মাসিকে দেখা। মা-বাবার উপরে | যদি কোনও অভিভাবক হন, তিনি ছিলেন মাসি। মাসি নিঃসন্তান ছিলেন, তাই আমাকে উনি সন্তানস্নেহেই বড় করেছেন। ১৯৭৮-এ আমার জন্ম। আমাদের পরিবার সম্পর্কে একটু বলি। আমার দাদু ১৯২১-এ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আমন্ত্রণে চলে আসেন, বাঁকুড়ার সোনামুখী-চুড়ামোসিনা গ্রামে। ওই গ্রাম থেকেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনেক সহযোগীও এসেছিলেন বিভিন্ন সময়ে। ১৯২৪ নাগাদ মাসির জন্ম সোনামুখীতে। ১৯২৭-২৮ নাগাদ, খুব ছোট বয়সেই শান্তিনিকেতনে চলে আসেন মাসি। তারপর থেকে ওঁর জীবনসফর ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও তাঁর আদর্শকে কেন্দ্র করে। আর আমার শৈশব-কৈশোর-যৌবন সবই ছিল বড়মাসিকে কেন্দ্র করে। বিয়ের পরে মায়েরা তিন বোন মিলে ঠিক করেছিলেন একসঙ্গে থাকবেন। সেই সূত্রে অ্যান্ড্রুজ পল্লিতে একই চত্বরে তিনজন আলাদা বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। আমি, আমার বাবা-মা, মাসি ও মেসো (বীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়) একই পরিবার হিসেবে বড় হয়েছি। আমার মা (বীথিকা মুখোপাধ্যায়, কণিকার ছোট বোন) আর বড়মাসির অসম্ভব নিবিড় সম্পর্ক ছিল। মাসির অনেক গুরুকেই মা-ও গুরু হিসেবে পেয়েছিলেন। ‘আনন্দধারা’য় গ্রিলের বারান্দার বাইরে বাবলা গাছ ছিল। সেই গাছে অনেক রকমের পাখির বাসা ছিল। মনে আছে, খুব ছোটবেলায় আমি মাসির কোলে মাথা রেখে শুতাম আর মাসি আমায় পাখির গল্প বলতেন। ‘ফুলপরি’-র গান গাইতেন, তার সঙ্গে আমাকে খাইয়ে দিতেন। বড় মাসির কাছে সন্তানসম এই নিবিড় স্পর্শ পেয়েছি। আমার ডাকনাম ছিল ‘পম’। বাবা ছিলেন লিওনার্দ এলমহার্স্টের ছাত্র। ওঁর ছেলের নাম ছিল পম এলমহার্স্ট। মাসি বলতেন, 'কী না