তাতারের বন্ধু

অলৌকিক বলে কিছু হয় না। অন্তত তাতার তো মানে না। ওর বাবা কলেজে ফিজিক্স পড়ান ৷ মা-ও কলেজে পড়ান। তবে সাইকোলজি। ঠাকুরদা ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। বড় পদে চাকরি করতেন। সকলের আশা তাতারও বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করবে।

- স্মরণজিৎ চ ক্র ব র্তী

চশমাটা মাঝে মাঝেই পিছলে যায়। তাতারের। বেশ অসুবিধে হয়। বার বার ঠেলে তুলতে হয়। ভারী কাচের আড়ালে তাতারের চোখ দুটো বড় বড় দেখায়। পরিমল আর ওর দলের ছেলেরা তাতারকে 'হ্যালোজেন' বলে ডাকে। গত বার সরস্বতী পুজোর সময় স্কুলে কয়েকটা বড় বড় গোলাকার হ্যালোজেন আলো নিয়ে আসা হয়েছিল। ব্যস, তার পর থেকেই ওকে হ্যালোজেন বলে ডাকা শুরু করেছে পরিমল, জয়দীপ, কমল আর সেতু। ওর চোখ দুটো নাকি অমন! কাউকে এ ভাবে অপমান করতেও নেই। একে 'বুলি' করা বলে। কিন্তু পরিমলরা এ সব পাত্তাই দেয় না। ওদের চার জনের দলটা এমনই। ক্লাস নাইনে পড়ার বয়সে ওরা ক্লাস সেভেন পড়ে এখনও। ওদের কথা হল, পাশ করে স্কুল ছাড়ার তাড়া নেই ওদের। বরং ধীরেসুস্থে এগোনোই ভাল। তাই মাঝে মাঝেই এক-একটা ক্লাসে এক বছর করে থেকে যায় ওরা। আর গোটা বছর ধরে বেছে বেছে চুপচাপ, শান্ত আর ভদ্র ছেলেদের উপর উপদ্রব করে। তাতার এখন বড় হচ্ছে। ও বোঝে, এই পৃথিবীতে ভদ্র আর ভাল মানুষদেরই সবচেয়ে বেশি কষ্ট দেওয়া হয়। তারাই সকলের ‘সফ্ট টার্গেট' হয়।