তোমার হাতেই মনের চাবি!

মানসিক চাপের সঙ্গে লড়তে টিনএজারদের অস্ত্র হতে পারে মাইন্ডফুলনেস। উপায় বললেন ডেভেলপমেন্টাল অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সাইকোলজিস্ট ও সাইকোথেরাপিস্ট মীনাক্ষী খুরানা সাহা।

- 

মানসিক চাপ, উৎকণ্ঠা, অবসাদ... এগুলো মোটেই প্রাপ্তবয়স্কদের একটেচিয়া নয়। টিনএজারদেরও প্রতি দিন এগুলোর সঙ্গে লড়াই করেই বাঁচতে হয়। এগুলোর সঙ্গে লড়াই করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেওয়া যায় ‘মাইন্ডফুলনেস’কে। ঠিক ভাবে যদি চর্চা করা যায় মাইন্ডফুলনেস-এর হাত ধরে নিজেদের মনকে ওরা আয়ত্তে আনতে পারে সহজেই। তখন রোজকার চাপ অতটাও আর দুঃসহ বলে মনে হবে না, লড়াই করার শক্তি জুগিয়ে দেবে ওদের মনই।

কাকে বলে মাইন্ডফুলনেস? খুব সোজা কথায় বলতে গেলে, নিজের চারপাশ সম্পর্কে নিজের মনকে অবহিত করানো এবং দুইয়ের মধ্যে একটা তালমিলের সেতু বেঁধে দেওয়া। এর মূল নিয়ম হল, পারিপার্শ্বিক সম্পর্কে নিজের মনকে সচেতন রাখা। আমরা প্রায় সকলেই নিজেদের জীবনের গড়ন অনুযায়ী, নির্দিষ্ট কিছু কাজ রোজ করি— ধরুন, নির্দিষ্ট রুটের বাসে বা মেট্রোতে চেপে রোজ একই জায়গায় যাওয়া, একই ধরনের কাজ করা, সংসারের কাজ, তার পর রাতে খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়া। তার মাঝে হয়তো কিছু ক্ষণ ওটিটি দেখা। মোটামুটি এই ঘূর্ণিপাকে ঘুরতে ঘুরতে চারপাশে তাকানো কি হয়ে ওঠে আমাদের? রাস্তায় যাঁরা চলাচল করেন, তাঁরা একই রুটে চলতে চলতে কতজন জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখেন, অঞ্চল অনুযায়ী শহরের টোপোগ্রাফি কী ভাবে বদলে যাচ্ছে? পথচারী, বাড়িঘর, দোকানপাট কতজন খেয়াল করেন? লাঞ্চ টাইমটুকুতে কতজন কাজের চাপ ভুলে, খাবারগুলোর স্বাদ নেন সত্যি করে? মাইন্ডফুলনেস এটাই— ‘অটোপাইলট মোড' থেকে বেরিয়ে চারপাশের সঙ্গে চলতে শেখা। প্রতিটি মুহূর্তের সঙ্গে বাঁচা। কারণ, বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে ভবিষ্যতের চিন্তা প্রায় সকলের মনেই উৎকণ্ঠা এনে দেয়। এবং অতীতের কথা ভাবলে অতীতের ভুলগুলোও মনে পড়ে, যা এনে দেয় অবসাদ। মুহূর্তের সঙ্গে যদি বাঁচতে শেখা যায়, মন তা হলে কোনও কিছুকেই আঁকড়ে ধরে না। নিরপেক্ষ দর্শকের মতো প্রতিটি ঘটনা, আবেগকে দূর থেকে দেখতে শেখে।