গানের ওপারে

লাইভ শোয়ে গান শুনতে এসে ভিডিয়ো, ছবি তোলার হিড়িক সর্বত্র। এতে শিল্পীরা আদতে কতটা খুশি? তাঁদের শিল্প এবং নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে না তো কোনওভাবে? লিখছেন সায়ক বসু

- সায়ক বসু

প্ৰতিবেদনের শুরুতেই তিনটি ঘটনার দিকে পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করব। অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সেগুলো অনেকেরই জানা হয়ে গিয়েছে এতদিনে। প্রথম ঘটনা অঞ্জন দত্তর একক নিয়ে। মাসখানেক আগে নিজের গানজীবনের ত্রিশ বছর উদযাপন করেছিলেন অঞ্জন। দু'টি একক অনুষ্ঠান দিয়ে। এবং সেই এককের আগে একটি ফেসবুক লাইভ অনুষ্ঠান করে তিনি বলেন, তাঁর অনুষ্ঠানে কোনওরকম ছবি বা ভিডিয়ো তোলা যাবে না। অঞ্জনের সাফ বক্তব্য ছিল, “আপনি টিকিট কেটেছেন গান শোনার জন্য। ছবি বা ভিডিয়ো তোলার জন্য নয়। কাউকে ওই অবস্থায় ধরা গেলে, সঙ্গে সঙ্গে সেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে শো ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হবে।” বলা বাহুল্য, দর্শককে অঞ্জনের সেই কথা মানতে হয়েছিল। এমনকি, গান চলার সময় দর্শকের হলের বাইরে যাওয়া বা ভিতরে ঢোকাও নিষিদ্ধ ছিল।

দ্বিতীয় ঘটনার কেন্দ্রে রূপম ইসলাম। ফসিলসের শো করে ক্লান্ত অবস্থায় হোটেলে ফেরার সময় সেলফি শিকারিরা তাঁকে ছেঁকে ধরে। সেই ভিড়ের ধাক্কাধাক্কি থেকে রূপমের স্ত্রী রূপসাও বাদ যাননি। ফলে রূপমের মুখ থেকে কিছু অনভিপ্রেত শব্দ বেরিয়ে যায় এবং সেই নিয়ে শুরু হয় ট্রোলিং। পরের দিনই রূপম ফসিলসের আর একটি শো থেকে বলেন, একটি মারাত্মক ক্লান্তিকর শোয়ের পর (ফসিলস যেভাবে নেচে-লাফিয়ে পারফর্ম করে, তার প্রেক্ষিতে) দশ মিনিট সময় তাঁর দরকার 'হৃত নিঃশ্বাস' ফিরিয়ে আনার জন্য। তারপর যত খুশি সেলফি তিনি তুলতে দেবেন। কারণ তিনি এটুকু বুঝেছেন, তাঁর নেপথ্যের লড়াই দেখার বা জানার ইচ্ছে কারও নেই। তাদের শুধু দাবী, শিল্পীর সঙ্গে সেলফির।

তৃতীয় ঘটনাটি ছোট। নচিকেতা চক্রবর্তী একটি লাইভ শোয়ে পারফর্ম করার সময় সামনের সারিতে বসে থাকা দুই নবীন প্রজন্মের শ্রোতার প্রতি একটি অশালীন শব্দ প্রয়োগ করেন। কারণ তারা শিল্পীর দিকে মোবাইল তাক করে বসেছিল।