ডিপফেকের গোল্লাছুট

প্রয়োজন জনসচেতনতা – সোশ্যাল মিডিয়ার ছবি, ভিডিয়ো, অডিয়ো অন্ধভাবে বিশ্বাস না করা।

- অতনু বিশ্বাস

বলিউড অভিনেত্রী রশ্মিকা মান্দানার ‘ডিপফেক’ ভিডিও নিয়ে গোটা দেশ যখন তোলপাড়, তার ঠিক ৩৬ বছর আগে আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার অভিনীত হলিউড ছবি দ্য রানিং ম্যান (১৯৮৭) কিন্তু ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল ‘ফেক নিউজ’ এবং ‘ডিপফেক’-এর। ছবিটিতে ভবিষ্যতের এক বিষণ্ণ ডিসটোপিয়ান আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষিতে শোয়ার্জেনেগারের চরিত্রটি এক নিরপরাধ ব্যক্তির, যিনি সম্পাদিত ফুটেজের মাধ্যমে অভিযুক্ত হয়েছেন কয়েক ডজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যার দায়ে। পরবর্তীকালেও, পুরনো কোনও ভিডিয়োতে অন্যের শরীরে ডিজিটাল পদ্ধতিতে তার মুখ ঢুকিয়ে দেখানো হবে হত্যা করা হয়েছে তাকে। এই তো ডিপফেক!

রশ্মিকার ঘটনাতে নড়েচড়ে বসেছে সকলে। হঠাৎ যেন উপলব্ধি হয়েছে আমাদের সমাজজীবনে ডিপফেক আছে। প্রবলভাবেই আছে। হলিউড আর বলিউড তারকাদের, নামজাদা রাজনীতিবিদদের, দক্ষ খেলোয়াড়দের, এমনকি ডাকসাইটে ব্যবসায়ীদেরও ডিপফেক ভিডিয়ো, অডিয়ো কিংবা ছবিতে সোশ্যাল মিডিয়া যে ছয়লাপ, তা অবশ্য অজানা ছিল না আমাদের কখনও অন্যের ধড়ে কারও মুন্ডু জুড়ে, যেমনটা হয়েছে রশ্মিকার ক্ষেত্রে। কখনও আবার কারও ঠোঁটে ইচ্ছেমতো কথা বসিয়ে। আমাদের দুনিয়ায় সত্যি-মিথ্যের সীমারেখাকে তা আচ্ছন্ন করছে ধূসর ঘন আবছায়ায়।

গবেষকদের হাত ধরে ডিপফেক প্রযুক্তি তৈরির শুরুটা সেই ১৯৯০-এর দশকে, যদিও তার আজকের রূপ আসেনি চট করে। ডিপফেক নামটাও হালের, যখন ২০১৭-য় ‘ডিপফেকস্’ নামের এক ‘রেডিট’ ব্যবহারকারীসহ রেডিট দুনিয়ার কিছু মানুষ ছড়িয়ে দেয় তাদের তৈরি এমনই প্রচুর পর্নোগ্রাফিক ভিডিয়ো, সেলেব্রিটিদের মুখ বসিয়ে।