দুর্বার চিত্রাক্ষরের ইতিহাস

বাংলা কলমের স্নিগ্ধ রোমান্টিকতা, মাটির তাজা সুবাসই শিল্পীর এই চিত্রমালার প্রাণভ্রমরা।

- সুশোভন অধিকারী

পশ্চিমবঙ্গ তথা সারা দেশের প্রবীণ শিল্পীদের মধ্যে রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় এক অন্যতম নাম। তাঁর চিত্রচর্চার ইতিহাস দীর্ঘ কালের। গভীর অনুধ্যানের সঙ্গে শিল্পের আঙিনায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। আজ প্রায় নব্বই ছুঁয়ে যাওয়া বয়সেও তাঁর চিত্রীসত্তা সমান ভাবে সচল, তীব্র ভাবে সজাগ। সময়ের নিরিখে পাঁচের দশকের গোড়ায় তিনি কলাভবনে ছবির পাঠ নিয়েছেন। সেই পর্বে আচার্য নন্দলাল প্রথাগত ভাবে কলাভবন থেকে সদ্য অবসর নিলেও বিশ্বভারতী প্রদত্ত 'ইমেরিটাস প্রফেসর' হিসেবে সম্মানিত। প্রথাগত অবসরের পরে তিনি নিয়মিত কলাভবনে আসেন এবং তাঁর বাড়ির দরজা ছাত্রছাত্রীদের জন্য সর্বদা অবারিত রেখেছেন। কলাভবনের ছাত্রাবস্থায় রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় আচার্য নন্দলালের বিশেষ স্নেহভাজন হয়ে উঠেছিলেন, সেই মহাশিল্পীর সান্নিধ্যে অতিবাহিত করেছেন শান্তিনিকেতন পর্বের অনেকটা সময়। ভেবে দেখলে, তাঁর চিত্রকলায় ভারতীয় ভাবনার বীজ রোপিত হয়েছে শিল্পীজীবনের সেই আদিপর্বে। শান্তিনিকেতনের স্মৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন এক আশ্চর্য সকালের কথা— “বেশ মনে আছে, শীতের ভোর। পূবের হিমেল ভারি আকাশ হালকা আলোয় মাখা মাখা হয়ে স্পষ্ট হবার ইঙ্গিত দিচ্ছে। পাখিদের ভোরে ওঠার ঝাপটা শব্দে আশ্রমে সকাল হবার প্রস্তুতি। এমনই সমাহিত মুহূর্তে কলাভবনের চত্বর থেকে একদল শিক্ষার্থী, শিক্ষক, প্রিয়জন মিলে ধীরে ধীরে লালমাটির রাস্তা বেয়ে একটি গান অবলম্বন চিত্রপটে উঠে এসেছে পুত্রকন্যা-সহ শিবপার্বতীর পরিবার। কোথাও-বা শিবকে বাদ দিয়ে পুত্রকন্যা-সহ কেবল মা দুর্গার উপস্থিতি। আবার কোনও পটে কেবল গণেশ তাঁর বাহনের সঙ্গে খুনসুটিতে মশগুল। কোথাও গণপতির আয়েসি অবয়ব, তো কোথাও কাগজ জুড়ে কেবল মুখের আকার। এ ছাড়া আছে একাধিক গণেশজননীর ছবি, কোথাও তর্জনী উঁচিয়ে