‘রঘু ডাকাত’আমার কেরিয়ারের প্রথম লার্জার দ্যান লাইফ কমার্শিয়াল সিনেমা : ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়

তিনি চান বাংলা সিনেমাকে জাতীয় স্তরে নিয়ে যেতে। বড় ক্যানভাসে ছবিকে ভাবতে। এবং ভিন্ন ভিন্ন জঁরের ছবিতে কাজ করতে। কিন্তু কেন তিনি মুক্তি দিলেন না তাঁর প্রথম ছবি? ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায় মন খুলে কথা বললেন। শুনলেন সায়ক বসু

- 

কলকাতায় জন্ম। আবার কুড়ি বছর মুম্বইতে কাটিয়েছেন। তারপর ফের এই শহরে ফিরে এলেন এবং সফল পরিচালক হলেন। আপনার শুরুর দিকের গল্পটা একটু শুনি। নব নালন্দায় পড়াশোনা করতাম। আমার প্রথম চাকরি টাটা ইন্টারন্যাশনালে। ম্যানেজমেন্ট ট্রেনি হিসেবে। দেড় বছর চাকরি করে আর ভাল লাগছিল না। চাকরি ছেড়ে মাসছয়েক 'ব্ল্যাক ম্যাজিক মোশন পিকচার্সে' অবজারভার হিসেবে কাজ করেছিলাম। মনে হয়েছিল, মুম্বই গেলে ভাল ক্রিয়েটিভ কাজ করতে পারব। তাই একদিন চাকরি ছেড়ে পকেটে পাঁচ হাজার টাকা এবং একটা সুটকেস নিয়ে ওখানে চলে যাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে পড়লাম ঘোর সঙ্কটে। আন্ধেরির সাতবাংলার একটা বাংলোর হলঘরে আমরা ১১ জন একসঙ্গে ভাড়া থাকতাম, একটা কমন ওয়াশরুম। বাবা মা রেগে গিয়েছিল, ছেলে চাকরি ছাড়ায়। তখনও বিয়ে করিনি, তাই বেপরোয়া ব্যাপার ছিল। ইংরেজিটা ভাল জানতাম। ক্রিয়েটিভ কাজ করার ইচ্ছে ছিল। ভেবেছিলাম, কিছু একটা হয়ে যাবে। মুম্বইতে তখন ইংরেজি সিরিয়াল বাংলায় ডাবিং করে দেখানো হত। আমি সেই কাজ করতে শুরু করেছিলাম। তাতে জীবন নির্বাহ করতে সুবিধে হয়েছিল। পরে সুবোধ পোদ্দারের সঙ্গে অ্যাড ফিল্ম বানাতে শুরু করি। শাহরুখ খানের সঙ্গেও কাজ করেছি।

কিন্তু সেফ কেরিয়ার ছেড়ে হঠাৎ স্ট্রাগলের দরকার হল কেন? আমি সারা জীবনই যে কাজ করতে চাই, সেটা শিখে করায় বিশ্বাসী। এমনিতে সতীনাথ মুখোপাধ্যায় আমার মামা। ‘স্বপ্নসন্ধানী' নাট্যদলে কাজ করেছি অনেক বছর। ফলে শেখার পরিবেশ আমার ছিল। কিন্তু কলকাতার বাইরে গিয়ে জগতটা জানতে চাইছিলাম। অ্যাড ফিল্ম বানাতে বানাতে আমি রিলায়েন্সের ক্রিয়েটিভ হেড পদে চাকরি শুরু করি। ওখানে 'শক্তিমান'-এর অ্যানিমেশন তৈরি করেছিলাম, ২৬ এপিসোডের। ওই সময় রাজকুমার হিরানীর সঙ্গে বেশ কয়েক বছর স্ক্রিপ্টের গ্রিন লাইটিং কমিটিতে কাজ করেছি। প্রচুর স্ক্রিপ্ট পড়তাম একসঙ্গে। বলতে পারেন, ওটাই আমার ফিল্ম স্কুল। ওটা করতে-করতে আমি একটা স্ক্রিপ্ট লিখেছিলাম। সেটা একটা প্রতিযোগিতায় পাঠাই এবং বিশ্বে সেরা দশের মধ্যে আসি। সেই স্ক্রিপ্ট নিয়ে কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের কমিটিও প্রশংসা করেছিল।