জন্মশতবর্ষে আমার দাদাজি রাজ কপূর

তাঁর বয়স যখন ছ'বছর, তখন ইহলোক ত্যাগ করেন ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো ম্যান অন আর্থ' রাজ কপূর। তা-ও দাদজির বিস্তর প্রভাব তাঁর উপরে। গোয়ার পানজিতে, ৫৫তম ইফি-র আসরে সুপারস্টার রণবীর কপূর মন উজাড় করলেন তাঁর প্রিয় দাদাজিকে নিয়ে। শুনে এলেন কৌশিক পাল

- 

দাদাজি সম্পর্কে আমার প্রথমেই যে কথাটা মনে পড়ে, তা হল 'বিগ ম্যান উইথ ব্লু আইজ'! নিজেকে অত্যন্ত ভাগ্যবান মনে করি যে, আমি রাজ কপূরের পরিবারে জন্মেছি। জীবনে এর চেয়ে বড় ‘লাক ফ্যাক্টর' আর কী হতে পারে? ভারতীয় সিনেমার জন্য আমার দাদাজি যে অবদান রেখেছেন, তা নিয়ে আমি অত্যন্ত গর্বিত। তাই তো ওই মানুষটার সম্পর্কে আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলে যেতে পারি। দাদাজির জন্মশতবর্ষে দাঁড়িয়ে তাঁকে আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই ।

‘আওয়ারা হুঁ' গাও, টফি নাও ইন্ডাস্ট্রিতে আসার পর থেকে একটি প্রশ্নের সম্মুখীন আমি সবসময়ই হই। তা হল, আমার উপর দাদজির কতটা প্রভাব পড়েছে? সত্যি কথা বলতে কী, দাদাজি যখন আমাদের ছেড়ে অনন্তলোকে যাত্রা করেন, তখন আমি খুবই ছোট, মোটে ছ' বছর বয়স।

তাই উনি কত বড় ফিল্ম পার্সোনালিটি, সেটা বুঝে ওঠার আগে অবধি উনি ছিলেন শুধুই আমার ‘দাদাজি’। ওঁর সঙ্গে কাটানো সময়ের যে স্মৃতিগুলো আজও আমার মনে উজ্জ্বল হয়ে আছে, তার মধ্যে অন্যতম 'টফি এপিসোড'। মনে আছে, আমি আর আমার দিদি ঋদ্ধিমা যখন দাদাজির বাড়িতে যেতাম, তখন উনি আমাদের ওঁর নিজের ঘরে নিয়ে যেতেন এবং সমস্ত ক্যারামেল টফিগুলো নিজের ফ্রিজে লুকিয়ে ফেলতেন! তারপর আমাদের সব তুতো ভাই-বোনেদের মানে করিনা, করিশ্মা, আমি, আমার দিদি... সবাইকে একটা লাইনে দাঁড় করিয়ে দিতেন। তারপর আমাদের একে-একে সামনে এগিয়ে এসে বলত হত, ‘সালাম' এবং গাইতে হত 'আওয়ারা' ছবির সেই বিখ্যাত 'আওয়ারা হুঁ' গানটা। তারপর ওঁর গালে কিস করতে হত.... এবং তারপরই ঘুষ হিসেবে মিলত ওই ক্যারামেল টফি। দাদাজির সম্পর্কে আমার এই স্মৃতি একান্তই ব্যক্তিগত। মা যখন কোনও কারণে রেগে গিয়ে আমার উপর চিৎকার করত, আমি দাদজিকে ফোন করে বলতাম, মাকে তার চেয়েও জোরে বকুনি দিতে। এই অ্যাডভান্টেজটা আমি সবসময় নিতাম। তাই রাজ কপূর কত বড় মাপের শিল্পী তার চেয়ে বরাবরই অনেক বড় হয়ে ছিল আমাদের দাদু-নাতির সম্পর্কটা। আর পাঁচটা বাচ্চার সঙ্গে তাদের ঠাকুরদাদার সম্পর্ক যেরকম হয়, ঠিক সেরকম।