শোলের নেপথ্য কথা

ছবিটিকে ঘিরে গল্পের কোনও শেষ নেই। আনাচকানাচ থেকে তারই সন্ধানে সুদীপ্ত রায়চৌধুরী।

- 

‘শো 'লে'। সাতের দশকের সেরা ছবি। অমিতাভ বচ্চনের ‘জয়’ আর ধর্মেন্দ্রর ‘বীরু' দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছিল। বন্ধুত্বে জয়বীরু অবিচ্ছেদ্য জুটি। যদিও তার মধ্যেও মানুষের মনে একটি বিশেষ জায়গা করে নিয়েছিল আমজাদ খান অভিনীত 'গব্বর সিং' চরিত্রটি। আজও ছোট থেকে বড় প্রায় সকলের কাছেই ভারতের অন্যতম সেরা ভিলেনের নাম একটাই—গব্বর সিং।

সেলিম জাভেদের পরামর্শ > ড্যানিকে পাওয়া যায়নি গহ্বর চরিত্রের জন্য। তাহলে কে হবেন গব্বর? তখনই আমজাদের নাম পরিচালক রমেশ সিপ্পিকে বলেছিলেন সেলিমজাভেদ। দুই চিত্রনাট্যকারের পছন্দে সায় দিয়ে আমজাদকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন রমেশ। দিল্লিতে আমজাদকে একটি নাটকে অভিনয় করতে দেখেছিলেন সেলিম। তখনই তাঁর মনে হয়েছিল যে, পর্দায় গব্বরকে নিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন আমজাদ। বলিপাড়ায় শোনা যায়, সেই সময় আর্থিকভাবে বিশেষ সচ্ছল ছিলেন না। আমজাদ। শ্যুটিংয়ের শুরুতে অমিতাভ, ধর্মেন্দ্র, সঞ্জীব কুমার, হেমা মালিনী, জয়ার মতো বড় বড় তারকাদের সঙ্গে অভিনয় করতে কিছুটা ইতস্তত বোধ করছিলেন তিনি। সিনে দুনিয়ার দাবি, 'শোলে'র শ্যুটিংয়ের সময় নিজের সংলাপ আওড়াচ্ছিলেন আমজাদ। তা শুনতে পেয়েছিলেন সেলিম এবং জাভেদ। গবর চরিত্রের কণ্ঠে যে গাম্ভীর্য চেয়েছিলেন তাঁরা, আমজাদের মধ্যে নাকি সেই গাম্ভীর্যের কিছুটা অভাব ছিল। সেজন্য পরে সেলিম ও জাভেদ একবার রমেশ সিপ্পির সঙ্গে আলাদা দেখা করেন। গবর চরিত্রে আমজাদকে পছন্দ না হলে সেখানে অন্য কাউকে ভাবা যেতে পারে বলেও জানান তাঁরা। সেলিম-জাভেদের এই ‘পরামর্শের’ কথা নাকি আমজাদেরও কানে পৌঁছয়। যদিও আমজাদের অভিনয় পছন্দ হয়েছিল রমেশের। তাই তাঁকে বাদ দিতে চাননি পরিচালক। সেবার পূর্ণ দায়িত্বে শ্যুটিং শেষ করলেও পরবর্তীকালে সেলিম-জাভেদের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব জন্মায় পর্দার গব্বরের। গোটা ছবিতে মাত্র ন'বার গবর সিংকে স্ক্রিনে দেখা গিয়েছিল। 'শোলে' মুক্তির পর আমজাদ খানের অভিনয় নিয়ে প্রশংসার ঝড় ওঠে দেশজুড়ে। কিন্তু ওই দূরত্বের কারণেই সেলিম-জাভেদের সঙ্গে আর কাজ করেননি তিনি।