বেনারসের বে না র সি

বিসমিল্লার সানাই আর বেনারসি শাড়ি ছাড়া বাঙালি মেয়ের বিয়ের কথা ভাবাই যায় না। বেনারসি শাড়িকে কেবল ‘শাড়ি’ বললে ভুল বলা হয়, এই শাড়ি ভারতের এক সনাতন ঐতিহ্যের সাক্ষী। বেনারসের অলিগলি ঘুরে বেনারসি মহল্লাগুলির সাতকাহন নিয়ে লিখছেন অনিরুদ্ধ সরকার।

- 

প্রতিদিন গড়ে প্রায় পনেরো হাজার শাড়ি বেনারস | থেকে কলকাতায় আসে। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে এমন ঘটনা হামেশাই শোনা যেত যে বেনারসি শাড়ি বিক্রির জন্য বেনারসের বহু শাড়ি ব্যবসায়ী কলকাতায় বাড়ি কিনছেন। বেনারসের ব্যবসায়ীরা কলকাতায় শাড়ি আনতেন বিক্রির জন্য এবং দোকানে দোকানে তা পৌঁছে ক্য দেওয়ার পর তাগাদা দেওয়ার জন্য এখানে থেকে যেতেন। আর কতবারই বা হোটেলে উঠবেন! তাই কিনে ফেলতেন বাড়ি। আজও পার্ক স্ট্রিট থেকে বড়বাজারে প্রতিদিন আসে হাজার হাজার বেনারসি শাড়ি। ইতিহাস বলছে, বেনারসি শাড়ির বাজার বাংলার পরেই তামিলনাড়ু, অন্ধ্র, গুজরাতের সুরাট আর বরোদায়। সে তুলনায় বেনারসির চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম দিল্লি কিংবা মুম্বইয়ে।

বেনারস আজও বিখ্যাত তার গলি, ষাঁড়, প্যাঁড়া, পেয়ারা কিংবা বেনারসি পানের জন্য। দশাশ্বমেধ ঘাটে স্নান সেরে কাশী বিশ্বনাথে পুজো দিয়ে বেনারসবাসী দিন শুরু করেন। হাজারও গল্পের বেনারস যেন সর্বধর্মের মিলনক্ষেত্র। আদি শঙ্করাচার্য থেকে শ্রীরামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দ... কে আসেননি এখানে? সন্ত কবীর, মীরাবাঈ... কে হাঁটেননি বেনারসের রাস্তায়! চার জৈন তীর্থঙ্করের জন্মস্থান এই বেনারস। সিদ্ধার্থ তাঁর বুদ্ধ হওয়ার যাত্রাপথ এখান থেকেই শুরু করেছিলেন। এছাড়া সঙ্গীত ঘরানা থেকে শাড়ি— হাজারো বিষয়ে বেনারসের নাম জুড়ে আছে।