সর্বেন্দ্রর সঙ্গে দূরত্ব

মানসিকভাবে তিনি সর্বেন্দ্র সিংহকে নিজের স্বামীর জায়গায় বসিয়েছিলেন। সর্বেন্দ্র যখন খুব অসুস্থ তখন তাঁর চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব তিনি নিজের কাঁধে তুলে নেন। অথচ সেই মানুষটাই তাঁকে দূরে সরিয়ে দিলেন। আনন্দলোকে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়-এর আত্মজীবনী। এবার ষষ্ঠ পর্ব

- 

গত সংখ্যায় পুরোটাই সর্বেন্দ্রকে নিয়ে বলেছিলাম। ওঁর মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান, রাস্তায় মদ খেয়ে সিন ক্রিয়েট করা, ওঁকে নিয়ে টেনশন করে আমার শরীর খারাপ হওয়া এবং সর্বশেষে ওঁর আমাকে প্রতিজ্ঞা করা যে উনি আর কখনও মদ স্পর্শ করবেন না। এই সংখ্যাতেও আমি সর্বেন্দ্রকে নিয়ে বলছি কারণ আমার জীবনের অনেকটা জুড়ে যেমন উত্তমদা ছিলেন, ঠিক ততটাই জুড়ে সর্বেন্দ্রও ছিলেন। শেষ সংখ্যায় বলেছি যে একপ্রকার জোর করেই আমি সর্বেন্দ্রকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। কয়েকদিন ধরেই লক্ষ করছিলাম যে সর্বেন্দ্র মাঝেমধ্যেই চুপ করে বসে থাকতেন। তাঁর মুখে-চোখে এক অসহ্য যন্ত্ৰণা ফুটে উঠত। জিজ্ঞেস করলে কিছু বলতেন না। কথা এড়িয়ে গিয়ে বলতেন ‘এই তো একটু ক্লান্ত লাগছে।' কিন্তু আমি ওঁকে দেখে বুঝতে পারতাম যে কোনও এক অসহ্য যন্ত্রণা ওঁকে গ্রাস করেছে। একদিন উনি আমার বাড়িতে বসেই এতটা কাহিল হয়ে পড়লেন যে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আমি তখন ওঁকে আমার মাথার দিব্যি দিয়ে জিজ্ঞেস করি ওঁর শরীরে ঠিক কী অসুবিধে হচ্ছে। তখন সর্বেন্দ্র আমার হাত দুটো চেপে ধরে বলেন, বেশ কয়েকমাস ধরে ওঁর পেটে অসম্ভব যন্ত্রণা হচ্ছে। ধীরে-ধীরে ব্যথাটা গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং শেষে গিয়ে শরীরটা অবশ হয়ে যায়।