বাবা নিজেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। ফলে বাড়িতে কেউ আমাকে প্যাম্পার করেননি কখনও।

সদ্য বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। অবশ্য, আন্তর্জাতিক স্তরে কিউয়িস্ট সৌরভ কোঠারির সাফল্য এমনিতেই ঈর্ষণীয়। কলকাতার এক অভিজাত ক্লাবে তাঁর মুখোমুখি মধুরিমা সিংহ রায়।

- 

২০২৫-এর আইবিএসএফ ওয়ার্ল্ড বিলিয়ার্ডস খেতাব দখল করেছেন সদ্য। তার রেশ কাটতে না কাটতেই সাক্ষাৎকারের জন্য সৌরভ কোঠারিকে পাওয়া গেল কলকাতার অভিজাত বেঙ্গল রোয়িং ক্লাবে। আদ্যোপান্ত কলকাতার ছেলে সৌরভ বিশ্বজয় করেছেন, তাও আবার দ্বিতীয় বার। এর আগে ২০১৮-তে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন, আর এবার আইবিএসএফ (ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনে অ্যাফিলিয়েটেড বডি এটি) বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পঙ্কজ আডবাণীকে হারিয়ে তিনি ছুঁলেন প্রায় ৩৫ বছর আগে গড়া তাঁর বাবা মনোজ কোঠারির রেকর্ডকে! দু'বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, ভারতকে অসংখ্য আন্তর্জাতিক সম্মান এনে দেওয়া মানুষটির সঙ্গে প্রাথমিক সাক্ষাতে নজর কাড়ল দু'টি দিক। প্রথমত, তাঁর আন্তরিকতা। হাসিমুখে ক্যামেরার জন্য অসংখ্য পোজ দেওয়ার পর ঝরঝরে বাংলায় বললেন, “জানেন, স্কুল জীবনে আমি বাংলায় কবিতা লিখেছিলাম। এখনও গোটা কবিতাটা কণ্ঠস্থ আমার।” কবিতা থেকে প্রিয় উক্তি, ঝরঝরে বাংলায় তাঁর কথাবার্তা শুনে মনে হল, মানুষটা খাঁটি কলকাতার আর মনেপ্রাণে বাঙালি। মনে মনে খুশি হলাম, আজ প্রায় পুরো আলাপচারিতাটাই বাংলায় হবে.....

গিরীশ পার্ক, বাঙালিয়ানা ও বিলিয়ার্ডস মারোয়াড়ি জৈন পরিবারের ছেলে সৌরভ। কিন্তু এত ঝরঝরে বাংলায় কথা বলতে শুরু করলেন যে, নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছিল না তাঁর মাতৃভাষা বাংলা নয়! “লা মার্টিনিয়ার ফর বয়েজে পড়তাম। স্কুলে বোধহয় আমিই একমাত্র অবাঙালি, যাঁর দ্বিতীয় ভাষা ছিল বাংলা। এই রেকর্ড মনে হয় কেউ ভাঙতে পারেনি,” হাসতে হাসতে বললেন। তাঁর বাবা (মনোজ কোঠারি) স্কটিশ চার্চ কলেজে খেলি, ৯৯৯টা শট ভাল খেললেও উনি ওই একটা খারাপ শট নিয়েই বলবেন। এবারে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফেরার পরে বাবা অসম্ভব খুশি হন ঠিকই, কিন্তু খেলা ছাড়া কোনও বিষয় নিয়ে কথা হয়নি। ভাবুন, সেমি ফাইনালে কিংবদন্তি ডেভিড কড়িয়েরকে হারিয়েছি! বাবা বিগলিত হতে পারতেন, উল্টে কত ব্যবধানে হারালাম তা নিয়ে বিশ্লেষণ করলেন!”