ভূতের বাড়ি

প্রতিটি জনমুখী প্রকল্প থেকে কিছু মানুষ যদি বরাদ্দ অর্থের বড় অংশ নিজেদের ভাগে আনতে পারেন, তা হলেও সেটা প্রচুর।

- শুভময় মৈত্র

অশরীরী বিষয় নিয়ে রাজনীতিতে আলোচনা কমই হয়। তবে গত কয়েক বছরে তৃণমূল শাসনে যে-ধরনের দুর্নীতি এবং দুর্বৃত্তায়নের অভিযোগ শোনা যাচ্ছে, তার প্রতিযুক্তিতে একমাত্র ভূত-পেতনি-দত্যি- দানোদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েই রাজনীতিকে নিষ্কলুষ রাখা সম্ভব! রাইটার্সে অশরীরীর উৎপাতের কথা দু'-একবার জানা গেছে। নবান্নেও মাঝরাতে গা শিরিশির করার মতো কোনও ঘটনা আজকাল ঘটছে কি না, সে খবর সংবাদ বা সমাজমাধ্যমে এখনও শোনা যায়নি। চাকরি এবং চালের সঙ্গে মাথার চাল নিয়ে বিভিন্ন গোলমালের কথা ভেসে আসছিল গত কয়েক বছর ধরেই। এই প্রসঙ্গে প্রায় দু'বছর আগে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে আমার, ‘বঙ্গে আবাস দুর্নীতি’ নিয়ে আলোচনার সুযোগ হয়েছিল। পরিস্থিতি এত দিনেও বদলায়নি। উল্টে এবার পাঁচ জায়গায় ‘সুদেষ্ণা রায়'-এর নাম দেখার পর সেই অভিযোগ অনেকটাই দানা বেঁধেছে। তৃণমূলের পক্ষে একটি যুক্তি এখানে আসতে পারে যে, এই ধরনের নাম বাংলায় খুব অপরিচিত নয়। ফলে এমনটা হতেই পারে। মুশকিল হল, সেই সমনামী ভদ্রমহিলাদেরও কিছুতেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না! শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যেমন যাঁরা চাকরি পেয়েছেন তাঁদের অস্তিত্বটুকু অন্তত আছে, মূল সমস্যা সেই সব মানুষের চাকরি পাওয়া উচিত কি না তাই নিয়ে। তর্কবিতর্ক চলছে সেই চাকরি শিক্ষাগত যোগ্যতায়, নাকি কাঞ্চনমূল্যে। আবাসের ক্ষেত্রে সেটুকু সমস্যা তো আছেই। শরীরী যে-মানুষটি বাড়ি তৈরি করার জন্যে টাকা পাচ্ছেন, তাঁকে অঞ্চলের নেতাদের কতটা ভাগ দিতে হচ্ছে, সেই প্রশ্ন আজকের নয়। খরা কবলিত কালাহান্ডিতে পৌঁছে ১৯৮৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী মন্তব্য করেছিলেন যে, জনমুখী প্রকল্পের প্রতিটি টাকার মাত্র পনেরো পয়সা পৌঁছোয় অভাবী মানুষের হাতে। বত্রিশ বছর পর, ২০১৭ সালের মাঝামাঝি, উচ্চতম ন্যায়ালয়ে একটি রায়ে তৎকালীন মাননীয় বিচারপতি এ কে সিক্রি এবং অশোকভূষণ মহাশয় উল্লেখ করেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সেই বক্তব্য। সঙ্গে আমাদের দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার দুর্নীতির কথা মেনে নিয়েছিলেন, ‘Resultantly, lots of ghosts and duplicate beneficiaries are able to take undue and impermissible benefits'। সেই রায়ে তাঁরা আশা প্রকাশ করেছিলেন যে, আধার ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের কাছে জনমুখী প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা দুর্নীতিমুক্ত পথে পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ বাড়বে। কিন্তু সত্যিই কি কাজ কিছু এগোল? আজ ২০২৪ সালের শেষে তৃণমূল শাস