সত্যতার পাঠ পড়ানোর দেশ

তুরস্ক ঘুরে এলেন পরিচালক অরিন্দম শীল। সেই দেশে গিয়ে তাঁর মনে হয়েছে, প্রাচীন সভ্যতা-সংস্কৃতি ঠিক এভাবেই টিকিয়ে রাখতে হয়। খাবার থেকে প্রকৃতি, সবতেই মুগ্ধ হয়েছেন তিনি। কেমন ছিল সেই সফর?

- সাক্ষাৎকার ও অনুলিখন ঋষিতা মুখোপাধ্যায়

প্রথমেই বলে রাখি টার্কি বা তুরস্ক যাওয়ার ইচ্ছে আমার বহুদিন ধরে ছিল। আসলে আমি ঐতিহাসিক জায়গা দেখতে বড্ড ভালবাসি। প্রাচীন সভ্যতার গল্প, স্থাপত্য আমাকে ভীষণ আকর্ষণ করে। তাই আমার ভাবনা-চিন্তার জায়গা থেকে টার্কি স্বর্ণখনি। এই দেশটার কিছুটা ইউরোপে কিছুটা এশিয়ায়। ভাবুন, ইস্তানবুলে বসফোরস ব্রিজের দিকে তাকিয়ে অন্য একটি কনটিনেন্টকে দেখছি আর নিজে দাঁড়িয়ে আছি অন্য কনটিনেন্টে। এখানে বলে রাখি, আমার যেমন ইতিহাস পছন্দ, আমার স্ত্রী শুক্লারও তাই। কোথাও বেড়াতে যাব ঠিক করলে, আমরা দু'জনে মিলে জায়গাটা বাছি। আমাদের চয়েসটা অনেকটাই একরকম বলে কোনও অসুবিধে হয় না। এবার ভ্রমণ বিবরণে আসি। কলকাতা থেকে ইস্তানবুলের কোনও সরাসরি ফ্লাইট নেই। তাই দিল্লি হয়ে যাই আমরা। দিল্লি থেকে পাঁচ-সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার মতো লাগে। রাতের ফ্লাইট নিয়েছিলাম বলে সকালে ইস্তানবুল নামি। তা সেদিনই আমরা ইস্তানবুল থেকে কায়সেরি গিয়েছিলাম। তার আগে অবশ্য ইস্তানবুলের বসফোরস স্ট্রেট দেখতে যাই। এখানে বলে রাখি, বসফোরসকে অনেকে নদী বললেও ওটা নদী নয়, স্ট্রেট। দুটো সমুদ্রকে কানেক্ট করে ইউরোপিয়ান টার্কি আর এশিয়ান টার্কিকে আলাদা করেছে। আমরা যখন ইস্তানবুলে নামি তখন ১৬-১৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা ছিল। তাই ক্লান্ত হওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। দারুণ ওয়েদার। নীল আকাশে ঝকঝকে রোদ্দুর আমাকে শরতের কলকাতার কথা মনে পড়িয়ে দিচ্ছিল। ওখানে কিন্তু কাশফুলও হয়। তবে আমাদের মতো সাদা আর বড় নয়, একটু বাদামি রঙের। তা আমরা সন্ধের ফ্লাইট ধরে কায়সেরি পৌঁছই। ওখানে একটা মজা আছে। কায়সেরিতে দাঁড়িয়ে মনে হবে সামনে একটা বরফঢাকা পাহাড়। ওটা কিন্তু পাহাড় নয়, আগ্নেয়গিরি। বহুযুগ আগে ইরাপ্ট করেছিল। এখনও সাদা হয়ে আছে। যাই হোক, কায়সেরি থেকে কাপাডোশিয়া যাই। কাপাডোশিয়া বা কাপাডোকিয়া আসলে হয়েছে। আমরা যে হোটেলে ছিলাম, সেটাও কেভের মতো। বাইরে থেকে পাথুরে বাড়ি, ভিতরে সব আধুনিক সরঞ্জাম মজুত। ওখানে এত রকমের ওয়াইন দেখেছি যে বলার নয়। আসলে এত ধরনের ফল হয়, সেগুলো দিয়ে ওয়াইন তৈরি হয়। তবে শুধু ওয়াইন কেন, কত ধরনের যে চা, রোজ় টি, পমিগ্রানেট টি, হিবিসকাস টি দেখেছি আর টেস্ট করেছি। এক ধরনের ফ্লেভারড মিষ্টিও হয়, যেটাকে ওরা ‘লোকোম বলে। আমি লোকোম নিয়ে এসেছি। অনেকদিন ধরে কেটে-কেটে খাওয়া যায়, এখনও খাচ্ছি তো। ‘বাকলাবা’ নামের মিষ্টি আছে। আমরা না পুরো