ভালবাসার গল্প
Desh
|January 02, 2025
বাদামি চুলের এলা কাঁদছিল। কিন্তু অমল যেন দেখতে পাচ্ছিল বাসবকাকার মুখ। দেখতে পাচ্ছিল আবছায়া একটা ঘর। আর তার মধ্যে ছোট্ট একটা পুঁটলির মতো পড়ে আছে ওর অসহায় বাবা।
এখন মল, শেষ পর্যন্ত তুই এ ভাবে আমাদের ঝোলালি ! লজ্জা করল না! একটা মেয়ের জন্য এ ভাবে আমাদের সঙ্গে বিট্রে করলি! বলরামদা বলেছে কোনও দিন তোর মুখ দেখবে না,” কথাটা বলে খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে চলে গেল নিতাই।
অমল কী বলবে বুঝতে না পেরে জলের দিকে তাকাল। সামনে দিয়ে দ্রুতবেগে বয়ে চলেছে শ্রাবণের ভরা মেঘনা। নদীর পারে মহিদুলদার কাঠের কারখানা। অমল সেখানে এসে একা-একা বসে থাকে। কখনও-কখনও নিতাইও আসে। কিন্তু আজ নিতাই এলেও বসেনি। ও-ই ওকে দোষারোপ করে চলে গিয়েছে। আর সত্যি বলতে কী, নিতাই ভুলও কিছু বলেনি। ওদের বহরিয়া স্পোর্টিং অ্যাসোসিয়েশন আজকের ফাইনালে তো ওরই জন্য জিততে পারেনি। একাই চারটে গোল মিস করেছে অমল। তার মধ্যে একটা পেনাল্টি। প্রথম হাফে ওর করা গোলটার যেন আর কোনও মূল্যই রইল না। দুই-এক গোলে হারের সব দায় এসে পড়েছে ওর ওপর। ও জানে বহরিয়ার মানুষজন ওকে আরও অপমান করবে। জানে, সবাই ওকে বিশ্বাসঘাতক ভাববে। কিন্তু ও কি একটা মেয়ের জন্য এমন করেছে!
মেঘনার বুকে জেলে নৌকারা ফিরে আসছে এখন। ছইয়ের মধ্যে জ্বলে থাকা হলুদ আলোর টিপ হাওয়ায় কেমন যেন কাঁপছে। মনে হচ্ছে জলের ওপর দিয়ে যেন ভেসে আসছে জোনাকিরা। ও মুখ ঘুরিয়ে পিছন দিকে তাকাল। মেঘনার পার থেকে ওদের বাড়িটা খুব কিছু দূর নয়। ওই তো আলো দেখা যাচ্ছে। মা কি সন্ধে দিল? বাবা কি ফিরল মল্লিকদের বাড়ির পুজো সেরে? অমল দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবল, কেউ কোনও দিন বুঝবে না কেন আজকের ম্যাচটা ছেড়ে দিয়েছে ও।
আজ, কিছু আগে আসু জ্যাঠা চাঁদপুর টাউনে নিজের বাড়ির নীচেই সাইকেলের দোকান দিয়েছে। সেখানে মাঝেমধ্যে বসে অমল। আসু জ্যাঠা খুব ভালবাসেন অমলকে। একটা সাইকেল দিয়েছেন তিনি। সেই সাইকেল করেই প্র্যাকটিসে যায় ও। বহরিয়া গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে মেঘনা। তার কিছুটা দূরেই ডাকাতিয়া খাল। এই নদ আর খালের মাঝেই ওদের বাড়ি। লোকে বলে ঠাকুরবাড়ি। চার হিস্সায় বাড়িটা ভাগ করা। অমলদের পূর্ব হিস্সা। একটা বড় উঠোন ঘিরে চারটে ভাগ। বাড়ির পিছনে সামান্য একটা বাগান আছে। সুপুরি নারকেল গাছের সঙ্গে আরও কিছু মরসুমি ফলের গাছও আছে।
Diese Geschichte stammt aus der January 02, 2025-Ausgabe von Desh.
Abonnieren Sie Magzter GOLD, um auf Tausende kuratierter Premium-Geschichten und über 9.000 Zeitschriften und Zeitungen zuzugreifen.
Sie sind bereits Abonnent? Anmelden
WEITERE GESCHICHTEN VON Desh
Desh
পুজোর গান পুজোর জলসা
বাংলার পুজো শুধুই দেবী আরাধনা নয়, এটি বাঙালির সংস্কৃতি, সঙ্গীত ও আনন্দের চিরন্তন উৎসব। আগমনী থেকে বিজয়া পর্যন্ত গানেই ধরা পড়ে উৎসবের রঙ, আবেগ আর ইতিহাস।
19 mins
October 02, 2025
Desh
শারদীয়ার ছবি
দেশ স্বাধীন হওয়ার পরের পাঁচ দশকে দুর্গাপুজো উপলক্ষে পাড়া সংস্কৃতি বিশেষভাবে বর্তমান ছিল। পাড়ার পুজো উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যার মধ্যে বিশেষ অগ্রণী। বাংলা চলচ্চিত্রের তারকা, গায়ক অনেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠান করতেন, পাড়ায় পাড়ায় রেষারেষি চলত এই সব অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করেই।
8 mins
October 02, 2025
Desh
হোমাগ্নি
হরু ঘোষাল, এক সময়ের পুরুতের ছেলে, আজ জীবনের দোরগোড়ায় টিকে থাকার লড়াইয়ে ক্লান্ত। বন্ধুর ছায়ায় আশ্রয় খুঁজতে গিয়ে সে বুঝল—খিদে, লোভ আর নিয়তি—সবই মানুষকে বদলে দেয়।
14 mins
October 02, 2025
Desh
আড়কাঠি
উদারীকৃত, বিশ্বায়িত ভুবনে শোষণের নব-ছদ্মবেশ ধারণ করা মুখোশের কদর্য মুখব্যাদান দেখিয়েছেন নাট্যকার।
3 mins
October 02, 2025
Desh
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আস্থা
নেপালে তরুণদের বিদ্রোহ রাজতন্ত্র বা ধর্মীয় মৌলবাদীদের ক্ষমতা দখলের অজুহাত হতে পারে না।
4 mins
October 02, 2025
Desh
অতীতচারণের অনন্য আলো
জলরঙের নিজস্ব প্রায়োগিক ইতিহাস আছে। তার প্রকরণ লক্ষ করার সুযোগ এই প্রদর্শনী।
4 mins
October 02, 2025
Desh
অন্ধকারের পেরিয়ে দুয়ার...
আলো-আঁধারির মায়ায় রেমব্রান্ট ও ভ্যান গখকে নতুন করে আবিষ্কারের গল্প— শিল্পীর যন্ত্রণা, সৃষ্টির আলো আর অমরতার স্পর্শের এক অনন্য যাত্রা।
1 min
October 02, 2025
Desh
বাংলার কলম, বাংলার পুজো
আমরা বাঙালি, আমাদের হৃদয় পূর্ণ কল্পনা আর ভক্তিতে। মা দুর্গা আসছেন—সকলের প্রাণে উৎসবের আলো জ্বালাতে।
9 mins
October 02, 2025
Desh
অবনত অনুসন্ধান
বইটি পড়লে স্পষ্ট হয় উত্তরের জনজাতিদের সম্পর্কে লেখকের অভিজ্ঞতা বেশি, তথ্যও তিনি যথেষ্ট আহরণ করেছেন।
5 mins
October 02, 2025
Desh
শিবাঙ্গের নরক
রাতের কলকাতার আলোআঁধারিতে বেলার এক অচেনা মেয়ের সঙ্গে দেখা, আর সেই সাক্ষাৎ তাকে টেনে নেয় রহস্যময় এক “বুক ক্লাব”-এর ভেতরে— যেখানে বইয়ের আড়ালে লুকিয়ে আছে নরকের দরজা।
21 mins
October 02, 2025
Listen
Translate
Change font size

