কবিতায় প্রেমে, প্রতিরোধে শাশ্বত

আধুনিকতাকে কাটিয়ে কবি এরিখ ফ্রিড প্রবেশ করেছেন উত্তরাধুনিক চিন্তার আনাচেকানাচে।

- হিন্দোল ভট্টাচার্য

১৯৯৩ সালে প্রকাশিত হয়েছিল এরিখ ফ্রিড (Erich Fried, ১৯২১-১৯৮৮)এর কবিতাসমগ্র— Gesammelte Werke। চার খণ্ডের এই কবিতাসমগ্র ১৯৪৪ থেকে ১৯৮৮ সময়কালে ফ্রিডের লেখা কবিতাগুলির এক আশ্চর্য সঙ্কলনই শুধু নয়, বরং যেন-বা বিংশ শতাব্দর ইতিহাস যা কবিতার ছত্রে ছত্রে লিখিত। কিন্তু তিনি তো শুধু রাজনৈতিক ইতিহাসের কবিতাই লিখে যাননি, লিখেছেন মানুষের মনের জানলাগুলির কথাও। আধুনিকতাকে কাটিয়ে তিনি প্রবেশ করেছেন উত্তরাধুনিক চিন্তার আনাচেকানাচে। এই কবিকে এক প্রধান রাজনৈতিক কবি হিসেবে ধরা হয়, যদিও, তিনি নিজেই বলেছিলেন, “একটি প্রেমের কবিতার ভিতরেও রাজনীতির বিষয়টি আশ্চর্যজনক ভাবে লুকিয়ে থাকতে পারে”। স্বভাবতই বুঝতে পারা যায় সমকালীনতাকে অগ্রাহ্য করেননি তিনি। কিন্তু যে প্রশ্ন উঠে আসে, তা হল, তবে কি এখন এরিখ ফ্রিড সমকালীন? এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো ফ্রিডের সবক'টি কবিতায় আলাদা আলাদা ভাবে পাওয়া যাবে না, কিন্তু কবিতাগুলির মধ্যে ফল্গুধারার মতো প্রবাহিত হওয়া সময়চেতনার মধ্যে থাকবে।

কোনও একজন কবির চিরকালীনতাকে বোঝা যায় তাঁর লেখার সমকালীনতার ভিতর দিয়ে। কীভাবে তিনি নিজের সময়কে দেখছেন এবং কীভাবেই বা তাঁর 'সময়' চিরসময়ের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে যাচ্ছে, এ এক সূক্ষ্ম লিখনপ্রক্রিয়া ও লিখনভঙ্গিমার বিষয়। ফ্রিড তেমনই একজন মহৎ কবি ছিলেন, সন্দেহ নেই। একসঙ্গে তিনি অনেক কিছু দেখেছেন। অনেক কিছুর মধ্য দিয়ে তিনি গেছেন। ইহুদি পরিবারে জন্ম এই কবির। নিজের চোখে দেখেছেন জন্মস্থান অস্ট্রিয়ার গৃহযুদ্ধ, হিটলারের আক্রমণ, ইহুদিবিদ্বেষ, ফ্যাসিবাদ, নিজের জীবন দিয়ে বুঝেছেন নির্বাসিত হয়ে অন্য কোনও রাষ্ট্রে চলে যাওয়ার অর্থ। লন্ডনে ফ্রিড