মেঘে ঢাকা তারারা...

মেঘে ঢাকা তারারা...

- 

বাংলা চলচ্চিত্রে এক নস্টালজিক হাওয়া বয়ে এনেছেন মেঘে ঢাকা তারকারা। মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়, শর্মিলা ঠাকুর ও রাখী গুলজার। দীর্ঘ বিরতির পর এই তিনজন কিংবদন্তি অভিনেত্রী আবার বাংলার রুপোলি পর্দায় ফিরেছেন, যা বাঙালি দর্শকের জন্য এক আবেগঘন মুহূর্ত। শর্মিলা ঠাকুর ফিরেছেন সুমন ঘোষের ‘পুরাতন’-এর মাধ্যমে। মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় আসছেন ‘আড়ি’ নিয়ে। এবং রাখীর ঝুলিতে ‘আমার বস'। শর্মিলা ও মৌসুমীর তুলনায় রাখী গুলজারের বাংলা ছবি কম। সত্যজিৎ রায় ও তরুণ মজুমদারের মতো পরিচালকদের হাতেই হাতে খড়ি যে দু'জনের, তাঁদের তুলনায় রাখী বাংলাতে গোড়ায় একটু নিষ্প্রভ হলেও তিনি নিজেকে উজ্জ্বল করে নিয়েছেন হিন্দি চলচ্চিত্রের দুনিয়ায়। বাংলার অভিনেতা অভিনেত্রীদের যে আরব সাগরে পাড়ি দিয়ে জনপ্রিয় হওয়ার পরম্পরা, তাতে এই তিনজন অত্যুজ্জ্বল। বাঙালি আসলে কী চায়, বলা মুশকিল। বাংলার সন্তান বাংলার বাইরে বিখ্যাত হয়ে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করুক, নাকি বাংলার বুকেই বিখ্যাত হয়ে সার্বিক পরিচিতি লাভ করুক, ঠিক কোনটা যে বাঙালির আসল কাম্য ধরা যায় না। তবে রিফ্লেটেড গ্লোরিতেও বাঙালি কখনওই পুরোপুরি খুশি নয়। জনপ্রিয়তা বা বিখ্যাত হওয়ার পরেও তাঁদের শিকড়ে ফিরে আসা, কোথাও যেন আত্মতৃপ্তি দেয়। কিন্তু মানসিকতা যেমনই হোক, শিকড় ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার মধ্যে কোথাও যেন একটা অপছন্দের সত্যি লুকিয়ে আছে, একথা মানতেই হবে। বাংলার বৃত্ত থেকে বাইরে বেরিয়ে যাওয়া মানে দেশের অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌঁছনো, বিশেষ করে মুম্বইতে কাজ করার মধ্যে একটা কোথাও যেন জাতীয় স্বীকৃতি আছে। এই মুম্বই ফ্যাক্টর কিন্তু গোড়া থেকেই ছিল। বাংলার স্বর্ণযুগ বলে যে সময়টাকে মনে করা হয়, সেসময়েও বহু শিল্পী বাংলা ছেড়ে চলে গিয়েছেন মুম্বইতে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে। বাংলায় সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছেও মুম্বইয়ের জনপ্রিয়তার স্বাদ পেতে চেয়েছিলেন স্বয়ং মহানায়ক উত্তমকুমারও। এই পরীক্ষানিরীক্ষায় কেউ সফল হয়েছেন, কেউ ততখানি হতে পারেননি। কিন্তু এই ইচ্ছের সুতোটা আজও রয়ে গিয়েছে।