নাম ভুলে যাওয়াটা মৃণালদার একটা বদভ্যেস ছিল

মৃণাল সেনের ‘বাড়ির মেয়ে’ ছিলেন তিনি। পরিচালক নন, পিতৃসম বন্ধু মৃণাল সেনকে নিয়ে কথা বললেন শ্রীলা মজুমদার

- 

মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা দেওয়ার সময় মৃণাল সেনের সঙ্গে কাজ করা শুরু করেছিলাম তো, তাই তখন সম্যক উপলব্ধি করতে পারিনি তিনি পরিচালক হিসেবে কতটা বড়মাপের... আমার কাছে তাই পরিচালক সত্তার চেয়ে মানুষ হিসেবেই বেশি চেনা মৃণালদা। বাবা মানে মৃণাল সেন, বন্ধু মানে মৃণাল সেন, পরিচালক মানে মৃণাল সেন। ওঁর কাজগুলো দেখে, এখন অবাক হয়ে ভাবি ওই কাজটা আমাকে দিয়ে করালেন কী করে! কোনওদিন বকুনি অবধি দেননি। শুধু বলতেন ‘আমি এটা চাই, তুমি পারবে? এটা করতে পারলে বেশ ভাল হবে।' আমি ডিরেক্টরস অ্যাকটর। উনি ঠিক যেভাবে বলতেন, আমি অন্ধের মতো অনুসরণ করতাম। আমি ওঁর পরিচালনায় পাঁচটা ছবি করেছি। আমার মনে হয়, মৃণালদা শ্যামবর্ণ, গার্ল নেক্সট ডোর মেয়েদের নিজের ছবির চরিত্র হিসেবে খুঁজেছেন সবসময়। লার্জার দ্যান লাইফ কনসেপ্টটা মৃণালদা ভেঙেচুরে শেষ করে দিয়েছেন। সাহিত্যিক মোহিত চট্টোপাধ্যায় মৃণালদার খুব বন্ধু ছিলেন। মোহিতদা আমাকে খুব খ্যাপাতেন। একদিন আমাকে বললেন, ‘সেদিন আমার সঙ্গে মৃণালবাবুর আলোচনা হল একটা ছবি নিয়ে, মনে হল তুই ওই ছবিটায় নেই।' আদৌও কিন্তু মৃণালদা কোনও ছবি করছেন না। আমি তো অতশত বুঝতাম না, বললাম, 'তাই, আমি নেই?’ তখন মোহিত্দা আমাকে বললেন, ‘তুই এক কাজ কর, স্কুল থেকে সোজা এই বাড়ির গেটে চলে আসবি আর তোর বয়সী অন্য কোনও মেয়েকে ঢুকতে দিবি না।' আমি সেরকমটাই করেছিলাম। পরে সব জানতে পারি। মৃণালদা চেন স্মোকার ছিলেন। সবসময় সিগারেট খেতেন আর সামনে যে থাকত, তার কাছ থেকে দেশলাই চাইতেন। তারপর আর কেউ সেই দেশলাই ফেরত চাওয়ার সাহস দেখাত না। ফলে দিনের শেষে পকেটে একগাদা দেশলাই জমে যেত। মোহিতদা একদিন ঘোষণা করে দিলেন, ‘প্যাকআপের পর সকলে মৃণালবাবুর ঘরে এসো, সকলে নিজের-নিজের দেশলাই চিনে ফেরত নিয়ে যাবে।' আমার বন্ধু হিসেবে মৃণাল সেনের ভূমিকার একটি উদাহরণ দিই। ধরুন, কোনও আউটডোর শুটিংয়ে গিয়েছি, কাজের ফাঁকে কোনও ছেলের সঙ্গে গল্প করছি, ঠিক খেয়াল করেছেন। খেতে বসে বললেন, 'কী কর