ছিন্নমূল মসলিনের এপারের বুনন

রোমান গ্রন্থ ‘পেরিপ্লাস অফ দ্য এরিথ্রিয়ান সি’, শাড়িতে মুগ্ধ হয়েছে, যার খোঁজে সুদূর ইউরোপের বাণিজ্যতরী নোঙর ফেলেছে বাংলার মাটিতে, সেই মিহি সুতোর কিংবদন্তি খণ্ডিত হয়েছে কাঁটাতারের আঘাতে। ছিন্নমূল এই শাড়ি এ বাংলায় কেমন আছে? তার গল্প শোনালেন দেবলীনা অধিকারী।

মহাশ্বেতা দেবীর ‘দ্রৌপদী’ গল্পে ‘দ্রৌপদী মেঝেন’ যখন শত অত্যাচারের পর উঠে দাঁড়ায়, তখন পাশে পড়ে থাকা সেই শাড়ি অনেক কিছু বলে। শাড়ি সবসময় গল্প বলে ফেলে আসা দিনের, প্রাচীন সমৃদ্ধির, ঐতিহ্যের আবার কখনও অখণ্ড বাংলার। মসলিন শাড়িও বাংলার বহু ঐতিহ্যের গল্প শোনায়। এই শাড়ির সঙ্গে জুড়ে রয়েছে কাঁটাতারের ইতিহাস। গঙ্গা-পদ্মার জল, অখণ্ড বাঙালির হৃদয়, ভাষা এই রকম অন্যান্য অনেক কিছুর মতো ভাগ হয়ে গিয়েছিল বাংলার গর্বের মসলিন। জন্ম হয়েছিল পশ্চিমবাংলার মসলিনের। কারণ এই মসলিন শিল্পের সঙ্গে ওতপ্রোত হয়ে রয়ে গেছে অখণ্ড বাংলা। এই দেশভাগ বাংলা ভাষার মতো মসলিনের গৌরবকেও ক্ষুণ্ন করেছে। কিন্তু তার পরও মসলিন মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে বর্ধমান, নদিয়ার শিল্পীদের হাত ধরে। আবার সৃষ্টি হচ্ছে কিংবদন্তি শাড়ির ইন্দ্রজাল। এই ছিন্নমূল মসলিনের বর্তমান ও ভবিষ্যতের প্রবণতা জানার জন্য অখণ্ড মসলিনের ইতিহাসের কাছেই আমাদের যেতে হবে।