ক্ষুদ্র আমি তুচ্ছ নই

আমাদের ভবিষ্যতের চিকিৎসা ব্যবস্থা কেমন হবে? সম্ভব হবে ক্যান্সার নিরাময়? ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা যাবে কৃত্রিম মানব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ? সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে ন্যানোপ্রযুক্তির মাধ্যমে চিকিৎসা ব্যবস্থা রূপায়ণ। লিখেছেন ডঃ অয়ন মুখোপাধ্যায়।

চি কিৎসাশাস্ত্র ও প্রযুক্তির মেলবন্ধন এক নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। বহু যুগ ধরে চলছে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় ও নিরাময়ের প্রয়োজনে। সাধারণভাবে অ্যালোপ্যাথিক এবং শল্য চিকিৎসায় দ্রুত রোগ নিরাময় সম্ভব হলেও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে চিকিৎসকদের রীতিমতো চিন্তা করতে হয়। যেমন ক্যান্সার চিকিৎসায় মূল আক্রান্ত কোষের সঙ্গে অনেক প্রয়োজনীয় কোষকেও ধ্বংস করতে হয়। অথবা এক বিশেষ ওষুধের প্রয়োজনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি ব্যবহার শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটায়। এছাড়া রোগ নির্ণয় করার সময়ও লক্ষ্যবস্তুর সঙ্গে সংযুক্ত সাধারণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতি হয়। তাই, সজীব বা কার্যকরী অংশকে কোনওরূপ প্রভাবিত না করে, লক্ষ্যবস্তুর (টার্গেট) উপর চিকিৎসা করার উপায় নিয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞানী মহল বহুদিন ধরে ভাবনাচিন্তা চালিয়ে যাচ্ছে।

বর্তমান সময়ে এক বহুল প্রচলিত ও কার্যকরী প্রযুক্তি হল ন্যানো প্রযুক্তি। এক মিটারের ১০০ কোটি ভাগের এক ভাগ হচ্ছে এক ন্যানোমিটার। সাধারণভাবে ১-১০০ ন্যানোমিটার আকৃতির জিনিসপত্রকে ন্যানোমেটিরিয়াল বা ন্যানোপার্টিকেল বলে। এই আকারের বস্তুর সংশ্লেষ, পরিমার্জন, বৈশিষ্ট্য নির্ণয়ে যে প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয় তাকে ন্যানোপ্রযুক্তি বলে। এই প্রযুক্তির সাহায্যে কোনও উপাদানের কেবলমাত্র আকৃতি ছোট করা হয় না। তার ধর্মেরও আমূল পরিবর্তন করা যায়। ফলে মূল পদার্থের চেয়ে ন্যানোমেটিরিয়ালের ধর্মের বিস্তর পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। দিন দিন এই প্রযুক্তির উন্নতি হচ্ছে। বিজ্ঞানের নানান ক্ষেত্রের সঙ্গে চিকিৎসা ক্ষেত্রেও এই প্রযুক্তির ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।