বয়ঃসন্ধিকাল ও প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাকরণ, কিছু কথা

পরামর্শে কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক ডাঃ কুণালকান্তি মজুমদার।

গোড়ার কথা প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বিভিন্ন সংক্রামক রোগ ঠেকানোর সহজ উপায় হল টিকাকরণ। অর্থকরি, কার্যকারিতা ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে দেখতে গেলেও জাতীয় ও রাজ্যস্তরে এবং সারা বিশ্বে বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণের ও নির্মূলের সহজতম উপায় হল টিকাকরণ। যে সমস্ত ব্যক্তি এইসব টিকা গ্রহণ করছেন, তাঁরা নিজেরাও যেমন বিভিন্ন সংক্রামক ও বিপদজনক ব্যাধি থেকে সুরক্ষিত হচ্ছেন, তেমনই সাধারণ মানুষের মধ্যেও এই ব্যাধির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলছে এই টিকাকরণ কর্মসূচি। একেই আমরা বলি। শুধু প্রতিরোধ ক্ষমতাই নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যে রোগ ছড়ানোর প্রবণতাও কমিয়ে দিচ্ছে এই টিকাকরণ কর্মসূচি। গুটি বসন্তের মতো কঠিন ব্যাধি বা পোলিওর মতো জটিল ব্যাধি আমরা নির্মূল ও নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি এই টিকাকরণের মাধ্যমে। ভবিষ্যতে হাম বা রুবেলার মতো ■ ব্যাধিও পর্যায়ক্রমে নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল করতে পারব। প্রায় তিন দশকের বেশি সময় আগে ভারতে বিশ্ব সংস্থার সাহায্যে শিশুদের মধ্যে টিকাকরণ কর্মসূচি চালু হয়েছিল। পরবর্তীকালে ১৯৮৫ সালে 'দ্য ইউনিভার্সাল ইমিউনাইজেশন প্রোগ্রাম'এর মাধ্যমে ৬টি রোগের বিরুদ্ধে টিকাকরণ শুরু হয়েছিল।

যেমন—যক্ষ্মা, ডিপথেরিয়া, ঘুংড়ি বা হুপিং কাশি, ধনুষ্টংকার বা টিটেনাস, পোলিও এবং হাম বা মিসেলস। জাতীয়স্তরে এই টিকাকরণ কর্মসূচির জন্য শিশুদের মধ্যে এই সমস্ত রোগের অসুস্থতার হার ও মৃত্যুর হারও উল্লেখজনকভাবে কমে গিয়েছে। কিন্তু আগের তুলনায় বেশি সংখ্যক শিশুকে টিকাকরণ কর্মসূচির আওতায় আনতে পারলেও এখনও ভারতে অনেক রাজ্যে এই টিকাকরণের হার কম।

কেন প্রাপ্তবয়স্কদের টিকা টিকাকরণ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রত্যেক শিশুর কাছে সঠিক তাপমাত্রায় ও সঠিক জায়গায় টিকা পৌঁছে দেওয়ার মতো পরিকাঠামো এখন ভারতে আছে। কিন্তু এখন সময় এসেছে ১৮ বছরের বেশি প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ও বয়ঃসন্ধিকালের কিশোর কিশোরীদেরও টিকাকরণ কর্মসূচির আওতায় আনা। বিশেষ করে রোগের প্রাদুর্ভাব ও আর্থিক দিক থেকে মূল্যায়ন করে।