অ্যানি ফাদিমান দাবি করেছেন যে, চার্লস ব্যাবিংটন ম্যাকলে নাকি বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ পাঠকদের অন্যতম ছিলেন। তিন বছর বয়সে পড়া আরম্ভ করেন, আর উনষাট বছর বয়সে যখন মারা যাচ্ছেন, তখনও নাকি তাঁর মুখের সামনে বই খোলা। কথিত আছে তিনি ব্যস্ত লন্ডন শহরের রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে অনায়াসে বই পড়তে পারতেন। সমুদ্রপথে ভারতবর্ষে আসার পথে তিনি পড়ে ফেলেছিলেন হোমার, ভার্জিল, সিজার, হোরেস, দান্তে, পেত্রার্ক, আরিয়স্তো, তাসসো, বেকন, সেভান্তেস, আর প্রায় সত্তর খণ্ডের ভলত্যের। চিঠিতে এক বন্ধুকে লিখেছিলেন, বই ভালবাসা এক আশ্চর্য আশীর্বাদ, যে-সব মানুষ আর নেই, তাঁদের সঙ্গে সংলাপ সম্ভব, প্রতিদিনের বাইরে গিয়ে, অ-বাস্তব এক জগতে বিচরণ করা সম্ভব।
ম্যাকলের নাম করে শুরু করেছি এই লেখা। এখন বেশ খানিকক্ষণ উত্তর-উপনিবেশবাদের কচকচি দিয়ে পাঠক ম্যাকলে আর প্রশাসক ম্যাকলের তফাত আলোচনা করা যেত। তবে সে সব কথা অন্যত্র বলেই থাকি। এই লেখার বিষয় বই আর পাঠকের সম্পর্ক, পাঠের মেজাজ বিষয়ে কিছু বৈঠকি কথা আলোচনা করি বরং। তত্ত্ব আর তর্কের ফিরিস্তি সরিয়ে রেখে বরং বোঝার চেষ্টা করি কেমন করে নিবিষ্ট পাঠক ম্যাকলে তাঁর সময়ে দাঁড়িয়ে ফিরে পড়ছেন বহু শতাব্দ আগের লেখা লিভি-র রোমের ইতিহাস। পড়ছেন দ্বিতীয় পিউনিক যুদ্ধের কথা। ত্রাসিমিন হ্রদের ধারে কার্থেজের সেনাপতি হ্যানিবলের কাছে পরাস্ত হচ্ছেন মহা পরাক্রমী রোমান সেনাপতি ফ্লামিনিউস। একপাশে দুরারোহ পর্বত, অন্যপাশে হ্রদ, ঘন কুয়াশায় আবৃত বন্ধুর পথে ভোরের আলো ফোটার আগেই কার্থেজের পদাতিক সৈন্যদল অতর্কিত আক্রমণে ছিন্নভিন্ন করে দিল রোমান সৈনিক দলকে। ঘণ্টা তিনেকের যুদ্ধে খতম হলেন প্রায় পনেরো হাজার রোমান সৈনিক। এই রোমহর্ষক যুদ্ধের বর্ণনা কোন জায়গায় বসে পড়ছেন ম্যাকলে? পড়ছেন সেই ত্রাসিমিন হ্রদের ধারে। যাত্রার সময় মনে করে নিয়ে গিয়েছেন লিভি-র রোমের ইতিহাস। আবার পৌঁছে গিয়েছেন হ্রদের ধারে ঠিক ভোরের আলো ফোটার আগে, ঠিক যেমন সময় হ্যানিবল পৌঁছেছিলেন তাঁর সৈন্যদল নিয়ে।
This story is from the May 02, 2023 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 8,500+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the May 02, 2023 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 8,500+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
ফণীমনসার স্বর্গ
গিরগিটির ছানাগুলো তার পিছনদিকে দৌড়ে গেল কাকে যেন কাছ থেকে দেখবে বলে। তার পায়ের কাছে গজিয়ে ওঠা কচি, সবুজ ঘাসের সমারোহে তখন রোমাঞ্চ জেগেছে নবাগতার পদস্পর্শে
তিন্নির প্রেম
আগুনচক্ষু মেলে তাকান তপতী। মুখে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ, “ওরে মুখপুড়ি, এই ঘরে থাকবি, আমাদের খাবি-পরবি, আবার আমাদেরই অবজ্ঞা করবি? খবরদার, ওই হাভাতেটার সঙ্গে ফের ঘুরঘুর করেছিস তো ঝাড়ুপেটা করব।”
রিমোট কন্ট্রোল
নারদ স্পষ্ট দেখতে পেল, নান্তু ছুটছে। আর চিৎকার করে বলছে, “ও বাড়িতে গার্ল বেবি হয়েছে, গার্ল বেবি। টুইন হয়েছে গো, টুইন।” অঙ্কন: রৌদ্র মিত্র
দুই পৃথিবী
একটু টলতে টলতেই ড্রয়িং রুমে এসে দাঁড়াল সে। তখনই মনে পড়ে গেল গতরাতের ঘটনাটা। আচ্ছা, ওই সাবানের গন্ধটা কি এখনও লেগে আছে ছবিটার গায়ে?
এ হৃদি কুঞ্জবনে
তার পিঠের ঝোলায় থাকা বাঁশিগুলি তাদের মাথা বের করে তাকিয়ে থাকে। শেষবারের মতো মধুময় এ পৃথিবীকে দেখে নিতে চায় তারা।
পাঁক
এমন পাঁকেই সাঁতার কাটত তার কিষণ! এমন পাঁকে দম আটকেই... এই নোংরার মধ্যে শ্বাস বন্ধ হয়ে আজ মৃত্যু হোক। এই ভাল। কিন্তু কী আশ্চর্য!
গন্তব্য
ধর্মাবতার আমার এই পতনের কারণ কী?” নিরুপমা ফিরে তাকায়, “কারণ, তুমি তোমার গন্তব্যে পৌঁছে গেছ।” সাদা পাহাড় আর নীল আকাশে নিরুপমার কথা প্রতিধ্বনিত হয়, হতেই থাকে। অঙ্কন: তারকনাথ মুখোপাধ্যায়
কলম ও ক্যামেরা
সত্যজিৎ ও রবীন্দ্রনাথ—এই দু'টি নাম যদি একত্রিত হয়ে কোনও নতুন বই বেরোয়, পাঠক কৌতূহলী হবেনই।
ইতিহাসের বিকৃতি কি আদতে রণকৌশল
ইতিহাসকে কেউ নিজস্ব মৃগয়াভূমি করে তুলতে চাইলে তা গভীর উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তার বিষয়।
আত্মবিশ্বাসের অভিযাত্রা
দু'টি সাম্প্রতিক হিন্দি ছবির আলোচনা।